নিজস্ব প্রতিনিধি, পেট্রাপোল: ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ১০টা বেজে ১৫ মিনিট। লাল, সাদা ও কালো রঙের একটি বিলাসবহুল বাস এসে দাঁড়াল বেনাপোল সীমান্তে। সেখানে নামানো হল যাত্রীদের। তারপর বাসটি ফাঁকা করে এল পেট্রাপোলে। বাসটিকে একধারে রেখে শুরু হল চেকিং। বিএসএফের ডগ স্কোয়াড গাড়িতে চেকিং শুরু করল। গাড়ি থেকে নেমে চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিলেন গাড়ির চালক রাজীব হোসেন (নাম পরিবর্তিত)। এরপর হাঁফ ছেড়ে বললেন-যাক তিনদিনের যন্ত্রণা থেকে এবার মুক্তি ঘটল। এবার শান্তি। আর যেন অশান্তি না হয়। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ক’দিনের বীভৎসতার কথা তুলে ধরেছেন গাড়ির চালক। তাঁর কথায়, ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের অধিকার ফিরে পেতে আন্দোলন করে। উভয়পক্ষের মধ্যে অশান্তির ঘটনায় দফায় দফায় তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। পুলিস পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি, তাই সেনা নেমেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
গাড়িতে বসে রাজীব বললেন, রবিবার থেকেই ভয়ঙ্কর কিছু একটা হবে, তা বুঝতে পারছিলাম। মালিকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল সোমবার থেকে হয়তো বাস চালানো যাবে না। আর তাই হল, সোমবার সকাল থেকেই রণক্ষেত্র হল এলাকা। হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পরে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। এই ক’দিনে রক্ত আর মৃত্যু দেখে আতঙ্কে ছিলাম। আমার বাড়ি ঢাকাতে। সেখানেও একই চিত্র। কথায় কথায় তাঁর সংযোজন, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হয়েছেন, এটা সত্যি। তবে, সেটা না হলেই ভালো হতো। কারণ ছাত্র আন্দোলন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু তা বদলে গেল ধর্মীয় উন্মত্ততায়। সবশেষে বললেন, বাংলাদেশকে বলা হয় লালন ফকিরের দেশ। তিনি ধর্ম ও মানবতার কথা বলেছেন। কিন্তু তাঁরই দেশে এমন হিংসার ঘটনায় আমাদের মাথা নিচু হয়ে যাচ্ছে। দেশের নতুন সরকার প্রসঙ্গে বললেন, আমাদের একটাই চাহিদা,মানুষ যেন ভালো থাকে, ব্যাস। নাহলে আমাদের পেটে টান পড়বে।