• ইসলামিক বাংলাস্তানের লক্ষ্যে জামাত
    বর্তমান | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ধর্মান্ধ কয়েকটি রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় সংগঠন আর ভারতবিরোধী অংশ ‘হাইজ্যাক’ করেছে ছাত্র আন্দোলন। তারই পরিণতি অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ আর সংখ্যালঘু নির্যাতনের এই নৈরাজ্য। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ‘কুঁড়ি’ আকারে বিকশিত হয়েছিল এই পরিস্থিতি। আর বৃহস্পতিবার রাতে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হতেই নখ-দাঁত বের করে ফেলেছে মৌলবাদীরা। সমাজমাধ্যম জুড়ে জামাত আর হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের একটাই দাবি—এবার গজওয়াতুল হিন্দ (অমুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ) শেষে আদায় করতে হবে ‘ইসলামিক বাংলাস্তান’। সমগ্র বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ডের একটা বড় অংশ, বিহারের কিষানগঞ্জ, কাটিহার, নেপালের ঝাপা, মায়ানমারের রাখাইন ও আরাকান অঞ্চল, আন্দামানের কিছু অংশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের অসম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম এবং মণিপুরের কিছু অংশ নিয়ে প্রস্তাবিত এই বাংলাস্তান। কাঙ্খিত এই এলাকা আদায়ে আরও একটি মুক্তিযুদ্ধে নামার আহ্বান জানানো হচ্ছে ফেসবুক-এক্স দুনিয়ায়। এমনকী এই প্রচারও চলছে যে, প্রস্তাবিত ‘বাংলাস্তানে’র সরকারি ভাষা হবে আরবি ও উর্দু।

    ইতিমধ্যেই ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন বড় শহরে রাস্তার ধারে আরবি ভাষার লেখাচিত্রে সাজানো হচ্ছে দেওয়াল ও প্রতিষ্ঠান। অন্তর্বর্তী সরকারের বেশ কয়েকজন ‘মাতব্বর’ও এবার সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার আহ্বান জানাচ্ছেন। গোয়েন্দারা বলছেন, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকত-উল-জেহাদি-ইসলামি (হুজি), জামাতুল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), হেফাজতে ইসলাম এবং জামাতপন্থীরা কখনও বৃহত্তর বাংলাদেশ, কখনও মোঘলস্তান, আবার কখনও মুসলিমাবাদ গঠনের দাবি জানাচ্ছিল। তারই নব্য সংস্করণ এই বাংলাস্তান। নতুন এই দাবি তোলার ক্ষেত্রে এহেন সংগঠনগুলির মধ্যে ‘যোগসূত্র’ প্রকট হয়েছে বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। 

    গোয়েন্দারা বলছেন, গত দু’দিন ধরে সমাজমাধ্যমে বাংলাদেশিদের একটা অংশের তৎপরতা চরমে। তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে পাকিস্তানের পেশোয়ার, করাচি, লাহোর ও কোয়েটার কট্টর ভারত বিরোধী কয়েকজন ‘ব্লগার’। এমনকী জেএমবি এবং হুজির জেলখাটা জঙ্গিরাও সেকাজে নাম লিখিয়েছে। এমনও কয়েকজন রয়েছে, যারা মাত্র দু’দিন আগে বাংলাদেশের জেল ভেঙে বেরিয়েছে। গোয়েন্দারা দেখছেন, সংগঠন নির্বিশেষে এহেন ধর্মান্ধ নেটিজেনদের সিংহভাগ দেশের নতুন নামকরণ ও নতুন জাতীয় সঙ্গীতের পক্ষে। সেব্যাপারে রীতিমতো সওয়ালও করছেন। অস্বীকার করছেন ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা। এই তালিকায় রয়েছে এমন বেশ কিছু অধ্যাপক, শিক্ষক, প্রযুক্তিবিদ এবং অনাবাসী বাংলাদেশি, যারা হাসিনার আমলে ‘প্রগতিশীল’ পরিচয় দিয়ে দেশ-বিদেশ ঘুরেছে। জোর তর্ক চলছে দেশের নতুন নাম নিয়েও—বাংলাস্তান নাকি পূর্ব পাকিস্তান? সমীক্ষা বলছে, ৯১ শতাংশের মত, বিধর্মীদের হটিয়ে নাম হোক ‘ইসলামিক বাংলাস্তান’!       
  • Link to this news (বর্তমান)