• শুরু ড্রাইভিং লাইসেন্স মেলা, উপচে পড়া ভিড়
    বর্তমান | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: দালাল ধরে ড্রাইভিং লাইসেন্স করাতে খরচ হতো আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। এর ফলে সমস্যায় পড়ত সাধারণ মানুষ। সেই কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মাত্র ২৪০ টাকা খরচে লার্নার লাইসেন্সের ব্যবস্থা করল জেলা পুলিস। বৃহস্পতিবার জেলার পুলিস লাইনস মাঠে লাইসেন্স করানোর জন্য উপচে পড়েছিল ভিড়। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিসের কর্তাদের। জানা গিয়েছে, ড্রাইভিং লাইসেন্স মেলা চলবে সাতদিন। অর্থাৎ ১৪ আগস্ট পর্যন্ত জেলার মানুষ লাইসেন্স করানোর সুযোগ পাবেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, অনেকেই বাড়তি টাকার জন্য লাইসেন্স করাতে পারছিলেন না। এরফলে বিনা লাইসেন্সেই ঘুরতে হতো। পুলিসের হাতে ধরা পড়লে দিতে হতো মোটা অঙ্কের ফাইন। 

    এদিন জেলার পুলিস সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্পের আওতায় নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হয়। অনেক সময়ে লাইসেন্স নিয়ে বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়। তাই ক্যাম্প করে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে কিছু দায়বদ্ধতা চলে আসে। আশা করি সুষ্ঠুভাবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। 

    প্রসঙ্গত, ২০১৬ সাল থেকে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচি চলছে। জেলাজুড়ে সারা বছরই নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই কর্মসূচির ফলে দুর্ঘটনাও কমেছে। তবে জেলা পুলিসের আধিকারিকরা লক্ষ্য করেন এখনও বহু মানুষের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। সেই কথা মাথায় রেখেই এই কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়। 

    জেলা পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন কোতোয়ালি, গুড়গুড়িপাল, খড়গপুর লোকাল, খড়গপুর টাউন থানা এলাকা সহ একাধিক এলাকার মানুষ লার্নার লাইসেন্স করার সুযোগ পেয়েছেন। ধাপে ধাপে প্রতিটি থানা এলাকার মানুষ লাইসেন্স করার সুযোগ পাবেন বলে জানা গিয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য সচিত্র পরিচয়পত্র সহ প্রয়োজনীয় নথি আবশ্যক বলে পুলিসের তরফে জানানো হয়েছে। জেলা পুলিসের অনুমান, এই কর্মসূচির মাধ্যমে জেলার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ লাইসেন্স করানোর সুযোগ পাবেন। প্রথম দিনই তিন হাজারের বেশি মানুষ লাইলেন্স করাতে উপস্থিত হন। 

    স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এখনও বহু মানুষের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। দালালদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে তবেই লাইসেন্স মেলে। কোনওভাবে পরীক্ষায় পাশ না করতে পারলে আরও মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়। এছাড়া জেলার প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের পক্ষে শহরে এসে লাইসেন্স করা সম্ভব নয়। এরফলে দালাল রাজ অনেকটাই কমবে। 

    এদিন ড্রাইভিং লাইসেন্স করাতে এসেছিল মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা শ্যামল নন্দী। তিনি বলেন, টাকার জন্য লাইসেন্স করাতে পারছিলাম না। জেলা পুলিস খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া বাইক চালাতে খুব সমস্যা হতো।  ড্রাইভিং লাইসেন্স মেলা। ছবি: অর্ণব দাস।
  • Link to this news (বর্তমান)