• ভরসন্ধ্যায় মাথায় বন্দুক ধরে ডাকাতি, লুট গয়না সহ নগদ  
    বর্তমান | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: ভরসন্ধ্যায় জনবহুল এলাকায় দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটল। বুধবার শান্তিপুর থানার চটকাতলা ফুলিয়ার বসাকপাড়ায় এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায়। মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে একটি বাড়ি থেকে প্রায় আট লক্ষ টাকার সোনার গয়না এবং নগদ প্রায় ৪৫ হাজার টাকা লুট করল ডাকাতদল। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে শান্তিপুর থানার পুলিস।

    ফুলিয়া চটকাতলায় দীর্ঘদিনের বাসিন্দা বাপ্পি বসাক। বছর পঞ্চাশের ওই প্রৌঢ় কাপড়ের ব্যবসা। প্রতিদিন ব্যবসার কাজে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে হয়। ওইদিন সন্ধ্যায় তিনি এবং তাঁর ছেলে অঙ্কুর বসাক ব্যবসার কাজে কিছুটা দূরে গিয়েছিলেন। আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ একটি বাইকে চেপে তিন দুষ্কৃতী তাঁদের বাড়িতে হানা দেয়। পরিচয় গোপন করতে তিনজনের মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। সেই সময় বাড়িতে একটি ঘরে টিভি দেখছিলেন বাপ্পিবাবুর স্ত্রী। পাশের ঘরে ছিলেন বৃদ্ধা মা। অভিযোগ, প্রথমে এক দুষ্কৃতী ঘরে ঢুকে ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রীর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে আলমারির চাবি বের করতে বলে। কিন্তু ওই গৃহবধূ চাবি দিতে রাজি না হলে তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। এরপর পাশের ঘর থেকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে অন্য এক দুষ্কৃতী ব্যবসায়ীর বৃদ্ধা মাকেও বের করে আনে। এদিকে, চাবি না পেয়ে ততক্ষণের তৃতীয় দুষ্কৃতী লোহার একটি রড দিয়ে আলমারি ভেঙে ফেলে। সেই আলমারিতেই ছিল বাপ্পিবাবু ও তার স্ত্রীর মিলিয়ে প্রায় ১০ ভরি সোনার গয়না। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৮ লক্ষ টাকা। সেই সোনার গয়না লুট করার পাশাপাশি হাতিয়ে নেওয়া হয় আলমারি এবং বেশ কয়েকটি শোকেসের মধ্যে থাকা নগদ প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। এদিকে, ততক্ষণে আলমারি ভাঙার আওয়াজ শুনে পাশের বাড়ি থেকে এক মহিলা ছুটে এসেছিলেন ব্যবসায়ীর বাড়িতে। তাঁর দিকেও বন্দুক তাক করে হুমকি দেয় ডাকাত দল। এর মাঝে নিঃশব্দে সমস্ত কাজ ছেড়ে ফের বাইক নিয়ে চম্পট দেয় তারা। গোটা ঘটনার নিয়ে বাপ্পিবাবু বলেন, ব্যবসার জন্য নগদ টাকা আমার বাড়িতে রাখাই থাকে। আলমারির লকারে ৩৫ হাজার টাকা ছিল। ১০ ভরি সোনার গয়না নেওয়ার পাশাপাশি সেই টাকা নিয়ে যায় ডাকাত দল। পুলিসকে সেটা জানিয়েছি। রাতে অবশ্য খেয়াল করি আরও ১০ হাজার টাকা পাশের একটি শোকেস থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে। তিনজনের হাতেই বন্দুক ছিল। তাই আমার স্ত্রী এবং বৃদ্ধা মা সাহায্য চাইতেও পারেনি। এমনকী আমার প্রতিবেশী এক মহিলা এলে তাঁর মাথাতেও বন্দুক ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। ডাকাত দল চলে যাওয়ার পর কাঁদোকাঁদো হয়ে আমার স্ত্রী ফোন করে বিষয়টি জানায়।

    এদিকে, দুঃসাহসিক এই ডাকাতির খবর যায় শান্তিপুর থানাতেও। রাতে ১১টা নাগাদ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিস। তারা ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ডাকাতদলকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। তবে জনবহুল এলাকায় ভরসন্ধ্যায় এভাবে মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ওই এলাকায়।
  • Link to this news (বর্তমান)