• ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়
    বর্তমান | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • অসীম দত্ত, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালকে বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (বিসিআই) শোকজ করতেই ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হল এনবিইউ’র প্রশাসনিক ভবন। বৃহস্পতিবার আইন বিভাগের পড়ুয়ারা রেজিস্ট্রার দেবাশিস দত্তকে ঘেরাও করে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। বিসিআই নোটিস দিয়ে সাত দিনের মধ্যে জবাব চেয়েছে। সন্তোষজনক উত্তর না এলে আইন বিভাগের পঠনপাঠন বন্ধের হুমকি দিয়েছে। তাই বিসিআই’র বকেয়া ৪৭ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দিতে ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন। পড়ুয়াদের চাপে আজ, শুক্রবার বেলা ১২টায় এগজিকিউটিভ কমিটির বৈঠক ডেকেছেন রেজিস্ট্রার। 

    তিনি বলেন, বিসিআই আমাদের শোকজ নোটিস দিয়েছে। আমরা শুক্রবার এই নিয়ে বৈঠক করব। সেখানেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

    বুধবার সন্ধ্যায় বিসিআই’র তরফে এনবিইউ’কে শোকজ নোটিস পাঠানো হয়। নোটিস পাঠিয়েছেন বিসিআই’র জয়েন্ট সেক্রেটারি তথা লিগাল এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক নলীন রাজ চতুর্বেদি। অনুমোদন ছাড়াই আইন বিভাগের পঠনপাঠন কেন চলছে সাত দিনের মধ্যে তার উত্তর জানতে চেয়েছে বিসিআই। পাশাপাশি বিষয়টির চূড়ান্ত সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিসিআই কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, সাত দিনের মধ্যে সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়া গেলে পরবর্তীতে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আইন বিভাগের পঠনপাঠনে বিসিআই’র স্থগিতাদেশ এমনকী সংশ্লিষ্ট বিভাগ বন্ধও করে দেওয়া হতে পারে। 

    এদিকে, শোকজ নোটিসের খবর জানাজানি হতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। এদিন বেলা ২টো নাগাদ আইন বিভাগের তিন শতাধিক পড়ুয়া প্রশাসনিক ভবনে জমায়েত করেন। এরপর রেজিস্ট্রারকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ চলে। রেজিস্ট্রার বলেন, শুক্রবার এগজিকিউটিভ কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আইন বিভাগের সপ্তম সেমেস্টারের ছাত্র সৌরভ ইসলাম বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছেলেখেলা করছে। শুক্রবারের মধ্যে বিসিআই’র বকেয়া ৪৭ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেওয়ার সময়সীমা আমরা এনবিইউ’কে দিয়েছি। ওই টাকা জমা না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটব। 

    ২০১১ সাল থেকে বিসিআই’র অনুমোদন ছাড়াই চলছে এনবিইউ’র আইন বিভাগের পঠনপাঠন। অনুমোদন না থাকায় পাশ করেও অন্য রাজ্যে এনরোলমেন্ট পাচ্ছেন না তাঁরা। পাশাপাশি অনুমোদনহীন আইন বিভাগের সার্টিফিকেটের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গাফিলতির বিষয়টি ‘বর্তমান’ প্রথম সামনে আনে। এরপরেই রাজ্যজুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়। 

    রাজ্যের অ্যাডিশনাল অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়জিৎ চৌধুরী বলেন, রাজ্য সরকারের একটাই স্ট্যান্ড, তা হল শিক্ষার পরিবেশ সুস্থ থাকুক। সকলে নিজের দায়িত্ব পালন করলে এই সমস্যা তৈরি হতো না। বিহার বার কাউন্সিলে এনরোলমেন্ট না পেয়ে এক ছাত্রের দায়ের করা মামলার জেরে অনুমোদন না থাকার বিষয়টি সামনে আসে। বর্তমানে এটা কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিটি বেঞ্চে শুনানি চলছে।  রেজিস্ট্রারকে ঘিরে বিক্ষোভ ছাত্রদের। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)