• মর্গের কুলিং মেশিন চুরি, দুর্গন্ধে ক্যান্সার বিভাগের কাজে ব্যাঘাত
    বর্তমান | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: মর্গের মৃতদেহের দুর্গন্ধে পালিয়ে যাচ্ছেন নির্মাণ কাজে নিযুক্ত শ্রমিকরা। আর এই শ্রমিকের অভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নির্মীয়মাণ নতুন ক্যান্সার ইউনিটের কাজ মন্থর হয়ে পড়েছে। অনেকদিন আগেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের কুলিং মেশিন চুরি হয়েছে। কিন্তু, আজও সেখানে নতুন করে মেশিন আনা হয়নি। যার ফলে মর্গে থাকা দেহ থেকে দুর্গন্ধ বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে। মর্গের সামনে তো বটেই, তার চারপাশের অনেকটা এলাকাজুড়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে। এই গন্ধের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকাটাই কঠিন হয়ে পড়েছে ক্যান্সার ইউনিটে কাজ করা শ্রমিকদের। 

    মর্গের গা ঘেঁষে বানানো হচ্ছে নতুন ক্যান্সার ইউনিট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি হাসপাতালে ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। এরই অঙ্গ হিসেবে উত্তরবঙ্গের আক্রান্তদের জন্য এই অত্যাধুনিক ক্যান্সার ইউনিট তৈরি হচ্ছে। ইউনিটটি তৈরির বরাত পেয়েছে কলকাতার একটি ঠিকাদার সংস্থা। সেই ঠিকাদার সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যান্য কর্মীরা বলেন, এখানে দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। কী করে শ্রমিকরা কাজ করবেন। আমরাই এখানে থাকতে পারছি না। সারাদিন মর্গের থেকে মৃতদেহের দুর্গন্ধ আসছে। এভাবে বেশিদিন থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়তে হবে। তাই শ্রমিকরা চলে যাচ্ছেন। 

    নির্মাণ সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, বাঁকুড়া সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আমরা নির্মাণ শ্রমিক এনে এখানে কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু, গত প্রায় আট মাসে ৫০ জন শ্রমিক পালিয়ে গিয়েছেন, একমাত্র দুর্গন্ধের জন্য। তাঁদের মুখ থেকে খবর সর্বত্রই ছড়িয়েছে। সকলে জেনে গিয়েছেন এখানে কাজ করা কঠিন। মর্গের পচা দুর্গন্ধে টেকা যায় না। জোর করে কাজ করলে শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে। একথা জানার পরই শ্রমিকরা কেউ আর এখানে কাজ করতে আসতে চাইছেন না। শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। পেলেও ধরে রাখা কঠিন হয়েছে আমাদের পক্ষে। শ্রমিকের অভাবে এই ক্যান্সার ইউনিটের কাজের গতি অনেকটাই শ্লথ হয়ে পড়েছে। ঠিকাদার সংস্থার তরফে এই সমস্যার কথা জানিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ডাঃ  ইন্দ্রজিৎ সাহা বিষয়টি অস্বীকার করেননি। তিনি বলেন, মর্গের কুলিং ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার পর আমরা স্বাস্থ্যদপ্তরে টাকার অনুমোদন চেয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। সেই টাকার অনুমোদন এসেছে। আশা করছি, পূর্তদপ্তর শীঘ্রই কাজ শুরু করবে।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)