• জনজাতির সংস্কৃতি রক্ষা করতে জলপাইগুড়িতে গড়েছিলেন আর্ট গ্যালারি
    বর্তমান | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: লক্ষ্য ছিল ডুয়ার্সের জনজাতির সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রসার। সেইসঙ্গে নগর সংস্কৃতিকেও তুলে ধরা। সেই লক্ষ্য নিয়েই জলপাইগুড়িতে আর্ট গ্যালারি গড়ে তুলেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তিনি তখন রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী। ১৯৯৫ সালের ২২ মার্চ শহরের বুকে শিলান্যাস হয়েছিল আর্ট গ্যালারির। বুদ্ধবাবুর নির্দেশ ছিল, দ্রুত কাজ শেষ করার। চার বছরের মধ্যেই সেজে ওঠে জলপাইগুড়ির আর্ট গ্যালারি, যার বর্তমান নাম সরোজেন্দ্র দেব রায়কত সাংস্কৃতিক কলাকেন্দ্র। 

    ১৯৯৯ সালের ৫ ডিসেম্বর নিজে এসেছিলেন জলপাইগুড়ির আর্ট গ্যালারির উদ্বোধনে। ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন জলপাইগুড়ির বাসিন্দা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক আনন্দগোপাল ঘোষ। তিনি বলেন, বুদ্ধবাবু চেয়েছিলেন, প্রতিটি জনজাতির যে আলাদা সংস্কৃতি তার সঠিক সংরক্ষণ। সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসা সংস্কৃতির প্রসার ঘটানো। একাজ করার জন্য উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয় জলপাইগুড়ি আর্ট গ্যালারি, যা আজও জলপাইগুড়ি শহরবাসীর শিল্প সংস্কৃতির পীঠস্থান। 

    প্রবীণ ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা গোবিন্দ রায়ও ছিলেন আর্ট গ্যালারির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। বললেন, চারু সান্যালের নামে আর্ট গ্যালারিতে প্রদর্শনী কক্ষ করা হয়। লক্ষ্য ছিল, আদিবাসী ও জনজাতিদের সংস্কৃতির সংগ্রহ থাকবে। তাঁদের নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্র দেখানো হবে। সেসব আর হল কোথায়! 

    ইতিহাস গবেষক আনন্দগোপাল ঘোষ বলেন, রাজপরিবারের সদস্য সরোজেন্দ্র দেব রায়কত নিজে গানবাজনা করতেন। শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল তাঁর। উপেন্দ্রনাথ বর্মনের স্মৃতিকথায় এসব লেখা আছে। তাছাড়া রংপুর থেকে এসেছিলেন মনোরঞ্জন চক্রবর্তী। তিনিও শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ওস্তাদ ছিলেন। জলপাইগুড়ির এই সংস্কৃতির ঐতিহ্য মুগ্ধ করেছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। তারপরই তিনি জলপাইগুড়িতে এলাকার মানুষের সংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র হিসেবে আর্ট গ্যালারি তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে জলপাইগুড়ির আর্ট গ্যালারি পরিচালনার দায়িত্বে এসজেডিএ। জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক স্বরূপ বিশ্বাস বলেন, আর্ট গ্যালারি এসজেডিএ পরিচালনা করে। আমরা আমাদের বিভাগের নির্দেশমতো জেলা শিল্প-সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
  • Link to this news (বর্তমান)