• ১০ বছরে সম্পত্তি করে ছাড় নিয়েছেন মাত্র ৪ জন
    বর্তমান | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর্থিক ছাড় আছে, কিন্তু নাগরিকদের আগ্রহ নেই! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি! ২০১৪ সালে কলকাতা পুরসভা নাগরিকদের সম্পত্তি করে ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন একটি শর্ত ঘোষণা করে। বলা হয়, বাড়ির রং নীল-সাদা করলে এক বছরের সম্পত্তি কর মকুব করা হবে। এই শর্ত মেনে সম্পত্তি করে ‘লোভনীয়’ ছাড় পেতে সাধারণ মানুষ আগ্রহ দেখাননি বলেই দাবি পুর কর্তৃপক্ষের। পুরসভা সূত্রে খবর, গত ১০ বছরে মাত্র চার থেকে পাঁচটি আবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লষ্ট ছাড় দেওয়া হয়েছে।

    রাজস্থানের জয়পুরের বাড়িগুলি যেমন গোলাপি, কলকাতাকেও তেমন ভাবেই নীল-সাদা রঙে সাজিয়ে তুলতে বছর দশেক আগে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তৎকালীন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। ঠিক হয়েছিল, কলকাতা পুরসভা এলাকায় বসবাসকারী যে কোনও বাড়ির মালিক এই সুবিধা পাবেন। নতুন ও পুরনো, সব বাড়ির ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য। তখন আরও বলা হয়েছিল, যাঁরা ইতিমধ্যে সম্পত্তি কর মিটিয়ে দিয়েছেন, তাঁরাও বাড়িতে নীল-সাদা রং করে আবেদন জানালে এক বছরের সম্পত্তি করের টাকা ফেরত পাবেন। অথবা সম পরিমাণ টাকা পরের বছরের সম্পত্তি করের সঙ্গে ‘অ্যাডজাস্ট’ করা হবে। পুরসভার সম্পত্তি কর মূল্যায়ন ও রাজস্ব আদায় বিভাগ সূত্রে খবর, ২০১৪ সালে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। রীতিমতো মেয়র পরিষদের বৈঠক করে নির্দেশিকা জারি হয়েছিল। কিন্তু, গত ১০ বছরে মাত্র ৪-৫টি আবেদন মঞ্জুর করা গিয়েছে। আবেদনই করেননি তেমন কেউ।  সংশ্লিষ্ট পুরকর্তাদের দাবি, এমনটা হওয়ারই ছিল। কারণ, বাড়ি রং করার যা খরচ, তাতে পুরোনো বাড়ির মালিকরা স্বাভাবিকভাবেই খুব একটা উত্‍সাহী হওয়ার কথা নয়। এক বছরের সম্পত্তি কর হিসেবে যত টাকা ছাড় পাওয়া সম্ভব, তার থেকে অনেক বেশি খরচ পড়বে পুরনো রং উঠিয়ে নতুন করে নীল-সাদা রং করতে। তবে আশা করা হয়েছিল, নতুন বা‌ড়ি এবং ফ্ল্যাটের মালিকরা এই শর্তে আগ্রহী হবেন। কিন্তু, তাও হয়নি। বিভাগীয় অফিসারদের একাংশের বক্তব্য, এই সিদ্ধান্তের পর আদালতে মামলাও হয়। তখন আদালতের তরফে কেন শুধু নীল-সাদা করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। শুনানি চলে। তবে পুরসভার ওই নির্দেশিকা এখনও ‘ভ্যালিড’ বা কার্যকর রয়েছে। কিন্তু এভাবে ছাড় নেওয়ার আগ্রহ নেই নাগরিকদের। 

    প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার সৌন্দর্যায়নের জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা করেন। তার অংশ হিসেবে গঙ্গার পাড় সৌন্দর্যায়ন, রাস্তার মিডিয়ান স্ট্রিপে বাহারি গাছ লাগানো সহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। রাজস্থানের জয়পুরের মতো কলকাতাকেও একটি নির্দিষ্ট রঙে সাজিয়ে তোলার চিন্তাভাবনা সেই সময় থেকেই শুরু হয়েছিল। 
  • Link to this news (বর্তমান)