• ‘পুলিস সেজে কেউ অপহরণের খবর জানালেও ভয় পাবে না’, স্কুলেই মা-বাবাদের সাইবার সচেতনতার পাঠ ছাত্রীদের
    বর্তমান | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন বা ভিডিও কল এলে তা রিসিভ করবে না। কোনও অজুহাত টোপে পা দেবে না। পুলিসের পোশাক পরে কেউ যদি ভিডিও কল করে জানায়, আপনার সন্তানকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ চেয়েছে। টাকা পাঠান। সেই ভিডিও দেখে ভয় পাবে না।’ কথাগুলি বলছে কতগুলি কিশোরী মেয়ে। বেঞ্চে বসে তা শুনে ঘাড় নাড়ছেন কয়েকজন মধ্যবয়স্ক।

    জোড়াবাগান থানা এলাকার শ্রী দিগম্বর জৈন বালিকা বিদ্যালয়ে অভিভাবকদের সাইবার সচেতনতার পাঠ দিল তাঁদের সন্তানরা। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিসের নর্থ ডিভিশনের সাইবার সেল ও জোড়াবাগান থানা একটি বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করেছিল। সেখানে পুলিস আধিকারিকদের সামনে বাবা-মাকে সাইবার অপরাধের নিত্যনতুন ধরণ নিয়ে সচেতন করল অষ্টম থেকে দশম শ্রেণিতে পাঠরত কন্যারা।  

    পুলিসের সাইবার বিভাগের বক্তব্য, নয়া প্রজন্মের মোবাইলে আসক্তি বেশি। তাই বিভিন্ন স্কুলে মাঝেমধ্যেই সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের সচেতন করা সহজ। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সাইবার প্রতারকদের টার্গেট মূলত থাকে মাঝবয়স্ক ও প্রবীণ। তাই স্কুল পড়ুয়াদের বাবা-মাকে সচেতন করার বেশি প্রয়োজন। সে কারণে জোড়াবাগান থানা এই উদ্যোগ নিয়েছে। শ্রী দিগম্বর জৈন বালিকা বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের এদিন স্কুলে ডাকা হয়। সেখানে প্রতারণার নয়া কৌশল নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন হয়েছিল। তথ্যচিত্রের মাধ্যমে সাইবার প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেতে কী করা উচিত, কী করা উচিত নয় তা জানানো হয়। 

    পুলিস জানিয়েছে, উত্তর কলকাতার এই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটিতে প্রায় ১০০ ছাত্রী কর্মশালায় যোগ দিয়েছিল। এসেছিলেন তাঁদের অভিভাবকরা। অনুষ্ঠান শেষে শর্মিলা যাদব নামে অভিভাবিকা বলেন, ‘মেয়ের কাছে বাড়িতে শুনেছি পুলিস সেজে ভিডিও কল করে সন্তান অপহরণের কথা বলা হচ্ছে। আবার কাস্টমসের অফিসার সেজে পার্সেলে মাদক পাওয়ার কথা জানিয়েও ডিজিটাল অ্যারেস্টের ভয় দেখানো হচ্ছে। আজ মেয়েরা শিক্ষিকাদের মতো ক্লাস নিয়ে এ বিষয়গুলি আমাদের বোঝালো।’ এই স্কুলে আগেও সচেতনতা প্রচার করা হয়েছে। তবে অভিভাবকদের ডাকা হয়নি। এদিন অভিভাবকদেরও ডাকা হয়। তারপর ছাত্রীদের বলা হয় সচেতনতার পাঠ দিতে। লালবাজারের দাবি, এতে ছাত্রীরাও নিজেদের ভাবনা একবার ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। অভিভাবকরাও নিজেদের সন্তানের মুখে শোনা বক্তব্যকে স্বাভাবিকভাবেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে শুনেছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)