• সরকারি কাজে পার্টি লাইনের প্রভাবকে দূরে রেখেছিলেন বুদ্ধদেব, স্মৃতিচারণায় কালীকৃষ্ণ গুহ ...
    আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • রিয়া পাত্র

    ১৯৪৪ থেকে ২০২৪। ৮০ বছর বয়সে জীবনাবসান ঘটেছে বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর। বৃহস্পতিবার চক্ষুদানের পর তাঁর দেহ শায়িত ছিল পিস ওয়ার্ল্ডে। শুক্রবার সকালে তাঁকে শেষবার নিয়ে যাওয়া হয় বিধানসভায়; সেখান থেকে আলিমুদ্দিন-দীনেশ মজুমদার ভবন হয়ে, প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হবে এনআরএস হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর দেহ দান করা হবে।

    বাম জমানার শেষ মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণে শোকাতুর কবি কালীকৃষ্ণ গুহ। একটা সময়ে তিনি কাজ করেছেন বুদ্ধদেবের সঙ্গে। কথায়-কথায় ফিরে এল সেসব প্রসঙ্গ। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩, রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী, ১৯৯৪-এ ফের রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী এবং ১৯৯৬ সালে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র, তথ্য ও সংস্কৃতি, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব।

    কালীকৃষ্ণ গুহ-র মনে পড়ছে দুটো সময়ের কথা। রবীন্দ্র সদনে তিনি যখন আধিকারিক, তখন বুদ্ধদেব বিকেলবেলার দিকে প্রায়ই যেতেন ক্যালকাটা ইনফরমেশন সেন্টারে। তখন থেকেই দু’জনের আলাপচারিতা বাড়তে থাকে। সেসব ১৯৯১-এর কথা। কয়েক বছর পরে, বুদ্ধদেবই তাঁকে নিয়ে আসেন নিজের দপ্তরে। বৃহস্পতির সকাল থেকেই কালীকৃষ্ণর মনে ঘুরছে সেসব দিনের কথা।

    বললেন, ‘দলের নেতাদের অনেক সময়ে বাধ্যবাধকতা থাকে, পার্টি লাইন মেনে চলতে হয়। কিন্তু বুদ্ধদেব সেটা সবসময়ে মেনে চলতেন না। উনি একজন মুক্ত মনের মানুষ ছিলেন। কর্মক্ষেত্রে অনেক বিষয়ে নানা পরামর্শ দিয়েছি, যেগুলো তিনি সবসময়ে শুনেছেন। অনেক সময়ে এমনও হয়েছে, আমার ঊর্দ্ধতন কর্তা আপত্তি করলেও বুদ্ধবাবু রাজি হয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম রামকিঙ্করের তৈরি করা রবীন্দ্রনাথের মূর্তি বসানো। আমার প্রস্তাবে তখনকার সেক্রেটারি রাজি না হলেও, রাজি হয়েছিলেন বুদ্ধদেব। একই ঘটনা ঘটেছিল অম্লান দত্তকে বিদ্যাসাগর পুরস্কার দেওয়ার সময়ে।’ 

    সিঙ্গুর-সময়কাল প্রসঙ্গও উঠে এল তাঁর স্মৃতিচারণে। বললেন, ‘বামপন্থীদের মধ্যে তখনও পুঁজিবাদীদের কাছে যাওয়ার ভাবনা আসেনি। তারা ভাবতেই পারত না। জ্যোতিবাবুর আমল পর্যন্ত শিল্প নিয়ে সেভাব কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, কারণ, তার অর্থ পুঁজিবাদের কাছে হাত পাতা। এই ক্ষুদ্রতা জয় করেছিলেন বুদ্ধদেব। দলের মধ্যেও বিরোধিতা এসেছে। কাজ করেছেন তার মধ্যেই। কখনও সরেননি নিজের জায়গা থেকে। শুধু কাজ নয়, সাহিত্য নিয়েও আলোচনা হয়েছে বহুবার।’
  • Link to this news (আজকাল)