• ইউনুসকে শুভেচ্ছা মমতার, এবার বাংলাদেশ চালাবেন যে ১৬ জন, রইল লিস্ট
    আজ তক | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নিয়েছেন। চারদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যেতে হয়। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ৮৪ বছর বয়সী ইউনুস শপথ নেন। অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের মানুষ, জেনারেল ও কূটনীতিকরা অংশ নেন। রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিনের কাছে শপথ নেওয়ার পর ইউনূস বলেন, আমি সংবিধান রক্ষা, সমর্থন ও সংরক্ষণ করব। মন্ত্রিসভার এক ডজনেরও বেশি সদস্যকে উপদেষ্টার পদ দেওয়া হয়েছে, তাঁরাও শপথ নিয়েছেন। যারা শপথ নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে প্রাক্তন ছাত্র নেতা নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদও রয়েছেন, যারা বাংলাদেশে সংরক্ষণ বিরোধী বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

    মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে ১৬ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ ঘোষণা করা হয়। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য নির্বাচন তত্ত্বাবধান করবে। উপদেষ্টাদের মধ্যে রয়েছেন সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান, হাসান আরিফ, তৌহিদ হোসেন, সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া, জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন, সুপ্রদীপ চাকমা, ফরিদা আখতার, বিধানরঞ্জন রায়, খালিদ হাসান, নুরজাহান বেগম, শারমিন মুর্শিদ এবং ফারুকি আজম।  বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশে নতুন নির্বাচন করানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

    ৮৪ বছরের ইউনুস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে ছাত্র আন্দোলনকারীদের সমর্থন পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার প্যারিস থেকে ঢাকায় ফেরেন তিনি। বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আমাদের শিক্ষার্থীরা যে পথ দেখাবে, আমরা সেই পথ ধরেই এগিয়ে যাব।' বাংলাদেশের নতুন প্রধান হওয়া মহম্মদ ইউনুস নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ৩২তম ব্যক্তি হয়েছেন এবং তিনি এখন রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে, সারা বিশ্বে আরও ৩১ জন ব্যক্তি রয়েছেন যাঁরা নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এবং আবার রাষ্ট্রপ্রধানের ভূমিকাও পালন করেছেন।

    ১৬ জন উপদেষ্টার লিস্ট

    মহম্মদ ইউনুস কে?

    গরিবের ব্যাঙ্কার হিসেবে পরিচিত ইউনুস এবং তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছে। তিনি গ্রামীণ দরিদ্রদের জন্য ১০০ ডলারেরও কম ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করে লক্ষ লক্ষ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের হতে সাহায্য করেছেন। এই হতদরিদ্ররা বড় ব্যাঙ্ক থেকে কোনও সাহায্য পেতেন না। ইউনুসের ঋণের মডেল বিশ্বজুড়ে এই ধরনের অনেক পরিকল্পনাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমেরিকার মতো উন্নত দেশও এর অন্তর্ভুক্ত।

    আমেরিকায় ইউনুস গ্রামীণ আমেরিকা নামে একটি পৃথক অলাভজনক সংস্থাও চালু করেন। সফল হওয়ার পরেই রাজনীতিতে ক্যারিয়ার গড়ার প্রতি তাঁর ঝোঁক বেড়ে যায়। ২০০৭ সালেও তিনি নিজের দল গঠনের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রতি শেখ হাসিনা ক্ষুব্ধ হন। তিনি অভিযোগ করেন, ইউনূস গরিবদের রক্ত ​​চুষে খাচ্ছেন।

    মহম্মদ ইউনুসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, 'অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সহ বাংলাদেশে যাঁরা কার্যভার গ্রহণ করেছেন, তাঁদের প্রতি আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভকামনা রইলো। আশা করি, তাঁদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরো উন্নত হবে। বাংলাদেশের উন্নতি, শান্তি, প্রগতি ও সর্বস্তরের মানুষের আরো ভালো হোক - এই কামনা করি। ওখানকার ছাত্র, যুব, শ্রমিক, কৃষক,  মহিলা থেকে শুরু করে সকলের প্রতি আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো। আশা করি, খুব শীঘ্রই সংকট কেটে যাবে, শান্তি ফিরে আসবে। শান্তি ফিরে আসুক তোমার-আমার এই ভালোবাসার ভুবনে। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভালো থাকলে, আমরাও ভালো থাকবো।' (অসম্পাদিত)
  • Link to this news (আজ তক)