• স্কুলে এসেই যেন ছাত্রাবস্থায় ফিরে যেতেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব, স্মৃতিচারণায় শিক্ষকরা
    প্রতিদিন | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • অর্ণব আইচ: সালটা ২০০১। জানুয়ারি মাস সবে পড়েছে। তারিখটা ৫। নিজের বিদ্যালয়ে আসেন তিনি। ধীর পায়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠে দোতলায় ক্লাস নাইন সি-র সামনে এসে দাঁড়িয়ে যান। স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, “আমার সময়ে এটা ক্লাস এইট বি ছিল।” কোন বেঞ্চে তিনি বসতেন, মনে করার চেষ্টা করেন। এর পর সিঁড়ি বেয়ে উঠে যান চারতলায়। সেখানে একটি লাইব্রেরি উদ্বোধন করেন। তিনি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মুখ‌্যমন্ত্রী হওয়ার পর স্কুলে এসে যেন হারিয়ে যেতেন ছাত্রজীবনে। দেখে বোঝার উপায় নেই, তিনি তৎকালীন মুখ‌্যমন্ত্রী?

    ১৯৫৪ সাল। উত্তর কলকাতার শ‌্যামপুকুর স্ট্রিটের শৈলেন্দ্র সরকার বিদ‌্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মেধাবী ছাত্র হিসাবে স্কুল ছাড়েন ১৯৬১ সালে। স্কুলের সহ-প্রধান শিক্ষক হরিনাথ নন্দ জানান, তথ‌্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী হওয়ার পর ১৯৯৭ সালে বুদ্ধদেববাবু স্কুলে এসেছিলেন। সেদিন স্কুলের প্রাক্তন প্রধানশিক্ষক জ্যোতির্বিকাশ মিত্রর আবক্ষ মূর্তি উদ্বোধন করেন তিনি।

    প্রাক্তন প্রধানশিক্ষক ছিলেন বুদ্ধবাবুর বাবার বন্ধু। সেই সুবাদে তাঁরা ধর্মীয় বই আদান-প্রদান করতেন। সেই বইগুলি বাবার হাত থেকে তৎকালীন প্রধানশিক্ষকের কাছে পৌঁছে দিতেন ছাত্র বুদ্ধদেব। ২০০১ সালে যখন লাইব্রেরি উদ্বোধন করতে ফের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য স্কুলে আসেন, তখন তাঁর সময়কার কয়েকজন শিক্ষককে অনুষ্ঠানে নিয়ে এসেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষকের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছিলেন বুদ্ধদেব।

    হরিনাথ নন্দর কথায়, ‘বৃহস্পতিবার যখন তাঁদের কাছে স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর প্রয়াণের খবর আসে, তখন শিক্ষক ও ছাত্ররা মূহ‌্যমান হয়ে যান। কিন্তু তাঁরা প্রাক্তন ছাত্রকে স্মরণ করতেই স্কুল ছুটি না দিয়ে ছাত্রদের পরীক্ষা নেন। স্মরণসভা করেন। প্রাক্তন ছাত্রর প্রয়াণে আজ শুক্রবার ছুটি থাকবে স্কুল।’
  • Link to this news (প্রতিদিন)