• হেডস্য়ারের চেয়ারে বসব না, ক্ষমতার শীর্ষে থেকেও বিনয়ী বুদ্ধদেব, বেতন পেতেন ১১৩
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • ২০০১ সালের ৫ জানুয়ারি। বাংলার মুখ্য়মন্ত্রীর চেয়ারে যিনি বসে রয়েছেন তাঁর নাম বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয়ে এসেছিলেন বুদ্ধবাবু। এই স্কুলেই তো একটা সময় পড়াশোনা করতেন তিনি। চারপাশটা ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন। বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই। তবুও পুরনো স্কুল মানেই অনেক স্মৃতি। দোতলায় ক্লাস নাইন সির সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এরপর বলে ওঠেন, আমার সময় এটা ক্লাস এইট বি ছিলেন। বোঝা যাচ্ছিল ধীরে ধীরে তিনি ফিরে যাচ্ছেন সেই স্কুলবেলায়। সেই স্কুলজীবনের দিনগুলোতে। এখানেই বেঞ্চে এসে বসতেন। সেই পুরনো স্কুলে এসে আবেগে ভেসেছিলেন বুদ্ধদেব। আজ তিনি না ফেরার দেশে। সেই দিনগুলোর কথা মনে করছেন স্কুলের শিক্ষকরা। 

    মুখ্য়মন্ত্রী হওয়ার আগে তথ্য় ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধবাবু। ১৯৯৭ সালে তিনি স্কুলে এসে স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জ্যোতির্বিকাশ মিত্রর আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করেছিলেন। তিনি ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর পিতার বন্ধু। বাবা যে সমস্ত বই দিতেন সেই বই তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছে পৌঁছে দিতেন। আবার প্রধান শিক্ষক যে বই দিতেন সেগুলি তিনি বাবার কাছে পৌঁছে দিতেন। 

    শুক্রবার সেই প্রাক্তন ছাত্র বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে স্কুল ছিল। তবে স্কুলের শিক্ষকদের মন আজ ভারাক্রান্ত। তাঁর নানা স্মৃতি আজও ছড়িয়ে রয়েছে। 

    ১৯৫৪ সালে এই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলেন বুদ্ধদেব। ১৯৬১ সালে তিনি এই স্কুল থেকে পাস করে বেরিয়েছিলেন। তবে যেবার তিনি স্কুলে এসেছিলেন সেবার হেডস্য়ারের চেয়ারে তাঁকে বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে তিনি বসেননি। বলেছিলেন, স্যাারের চেয়ারে বসব না। 

    অন্যদিকে প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বাংলা সাহিত্যের ছাত্র। লেখালেখি করতেন। সাংস্কৃতিক নানা কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। রাজনৈতিক নানা কাজের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। 

    বাংলা পাঠচক্রের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। ম্যাগাজিনে আজও রক্ষিত আছে তাঁর লেখা। প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ তাঁর রোল নম্বরযুক্ত রেজিস্টার ও লেখা সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

    সেই সঙ্গেই কয়েক বছরের জন্য তিনি দমদমের রে শেঠবাগান আদর্শ বিদ্যামন্দিরে শিক্ষকতা করেছিলেন। বাংলার শিক্ষক। ১৯৬৮ সালে তিনি এই স্কুলে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। ১১৩ টাকা মাইনের চাকরি করতেন তিনি। এখনও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে সেই রেজিস্টার রয়েছে। সাদা ধুতি, পাঞ্জাবি পরে যিনি স্কুলে আসতেন তিনি আজ চিরবিদায়ের পথে। 
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)