• চিরঘুমে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য,স্বপ্নই থেকে গেল সিঙ্গুর-শালবনি-নন্দীগ্রামে শিল্পায়ন
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৯ আগস্ট ২০২৪
  • চলে গেলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বাম জমানার শেষ মুখ্য়মন্ত্রী।  রাজ্যকে নিয়ে নানা স্বপ্ন দেখতেন তিনি। সেই স্বপ্নে আন্তরিকতা ছিল ১০০ শতাংশ। তারপরেও সফল হল না স্বপ্ন। কারণটা কী? কোথাও কি কাজ করত ক্ষমতার দম্ভ?

     সেই স্বপ্নের ফেরিওয়ালা আজ আর নেই। তাঁর নানা স্বপ্ন কার্যত অধরাই থেকে গেল। বিশেষত বাংলায় নতুন করে শিল্পায়নের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে প্রয়োগ করতে গিয়ে একের পর এক ধাক্কা। একের পর এক ধাক্কায় নড়ে গিয়েছিল বাম দুর্গের ভিত। 

    সিঙ্গুর থেকে নন্দীগ্রাম। গোটা বাংলায় শিল্পায়নের জোয়ার আনতে চেয়েছিলেন বুদ্ধবাবু। একেবারে অনড় প্রতিজ্ঞা। রাজ্য়ের উঠতি যুবক যুবতীদের হাতে কাজ তুলে দিতে হবে। কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ। সেই সময় বাম নেতৃত্বের অনেকেই বলতেন, পরে বাংলার মানুষ বুঝবেন এই বিরোধিতা আসলে তাদের বড় ভুল। কার্যত সেই শিল্পায়নের উপর ভিত্তি করে বাম দুর্গের ভিতকেও আরও মজবুত করার চেষ্টা করেছিল সিপিএম। কিন্তু ফলাফল হল ঠিক উলটো। 

    সিঙ্গুরে এসেছিল টাটা গোষ্ঠী। শিল্প কারখানা তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়েছিল। কিন্তু বিরোধীরা এরপর মাঠে নামেন। দীর্ঘ আন্দোলন। একের পর এক ঘটনা। কিন্তু অনড় বামফ্রন্ট সরকার। শিল্প গড়তেই হবে। জমি সংক্রান্ত জটও অনেকটা কাটিয়ে ফেলেছিলেন বুদ্ধবাবুরা। কিন্তু তারপরেও শেষ রক্ষা হল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে ধারাবাহিক আন্দোলনের জেরে টলে গিয়েছিল বাম দুর্গের ভিত। 

    শালবনিতে ২০০৭ সাল নাগাদ জমি অধিগ্রহণ করেছিল তৎকালীন বাম সরকার। কথা ছিল জিন্দালরা শিল্প কারখানা গড়বেন এখানে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেখানে ইস্পাত কারখানা গড়ে ওঠেনি। 

    পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরেও শিল্প কারখানা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। রঘুনাথপুর ১ ও নিতুড়িয়া ব্লক জুড়ে তৈরি হয়েছিল এই শিল্প কারখানা তৈরির উদ্যোগ। একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল সেখানেও শিল্পায়নের স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। 

    নন্দীগ্রামেও কেমিক্যাল হাব তৈরির জন্য একেবারে উঠেপড়ে লেগেছিল বাম সরকার। তবে এলাকায় জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে সমস্যা তৈরি হচ্ছে এটা আঁচ করে পিছু হঠার চেষ্টা করেছিল বাম সরকার। কিন্তু ততক্ষণে এলাকায় অশান্তি চরম আকার নিয়েছে। এরপর পুরোটাই ইতিহাস। চলল পুলিশের গুলি। একের পর এক মৃত্যু। কার্যত বামেদের কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতে দিয়েছিল এই নন্দীগ্রাম। 
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)