মালদহে লাইনচ্যুত মালগাড়ি, বন্দে ভারত সহ বেশ কয়েকটি ট্রেনের পরিষেবা ব্যাহত
বর্তমান | ১০ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: এবার মালদহ! ১০ দিনের মধ্যে রাজ্যে ফের রেল দুর্ঘটনা। শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের কুমেদপুর স্টেশনের কাছে একটি মালগাড়ির পাঁচটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়। রেল সূত্রে খবর, তেলভর্তি ট্যাঙ্কার নিয়ে মালগাড়িটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে কাটিহারের দিকে যাচ্ছিল। ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। তবে দুর্ঘটনাস্থল থেকে বেলাইন মালগাড়ি সরাতে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে। পুরো প্রক্রিয়া তদারকি করছেন রেলের কাটিহার ডিভিশনের আধিকারিকরা। আজ, শনিবারের আগে লাইন মেরামত করে পরিষেবা স্বাভাবিক করা যাবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, অসমের বঙ্গাইগাঁও থেকে বিহারের বারাউনি যাচ্ছিল মালগাড়িটি। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ছেড়ে কাটিহার যাওয়ার পথে কুমেদপুর রেল স্টেশনে তালগ্ৰাম ব্রিজের পাশে লাইনচ্যুত হয় পাঁচটি ওয়াগন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে কাটিহার ডিভিশনের কুমেদপুর স্টেশনে মালগাড়ি লাইনচ্যুত হয়। সেই কারণে বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। কয়েকটি ট্রেন চালানো হচ্ছে যাত্রাপথ পরিবর্তন করে।’ এই ঘটনার পর মালদহ-নিউ জলপাইগুড়ি রুটের কয়েকটি ট্রেন বাতিল এবং কয়েকটির যাত্রাপথ পরিবর্তন করতে হয়। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, এদিন নিউ জলপাইগুড়ি-হাওড়া ডাউন বন্দেভারত বিকেল ৩টের পরিবর্তে বিকেল ৫টায় নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছেড়েছে। এছাড়া, বালুরঘাট-শিলিগুড়ি জংশন এক্সপ্রেস, মালদহ টাউন-নিউ জলপাইগুড়ি এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়েছে।
কুমেদপুর স্টেশনে যখন মালগাড়ি লাইনচ্যুত হয়, সেই সময় নিউ জলপাইগুড়ি-হাওড়া আপ বন্দেভারত এক্সপ্রেস সামসি স্টেশন অতিক্রম করছিল। দুর্ঘটনার খবর হওয়া মাত্র সেই স্টেশনেই বন্দেভারতকে থামিয়ে দেওয়া হয়। তারপর ট্রেনটির যাত্রাপথ বদল করে কাটিহার দিয়ে ঘুরিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি পাঠানো হয়। ডাউন হলদিবাড়ি-কলকাতা ত্রি-সাপ্তাহিক এক্সপ্রেসকে কিষানগঞ্জ স্টেশনে রুট বদল করে কাটিহার দিয়ে রওনা করানোর ব্যবস্থা হয়। এছাড়া কামাখ্যা-পুরী, দিল্লি-আলিপুরদুয়ার এক্সপ্রেসের যাত্রাপথ পরিবর্তন করে কাটিহার ও মুকুরিয়া দিয়ে চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে রেল।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনে দেশজুড়ে ঘটে গিয়েছে একের পর এক রেল দুর্ঘটনা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে প্রাণহানি হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে একটুর জন্য এড়ানো গিয়েছে বড়সড় বিপর্যয়। গত ৩১ জুলাই কাটিহার ডিভিশনের রাঙাপানিতে লাইনচ্যুত হয়েছিল একটি মালগাড়ি। সেই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও তার কয়েকদিন আগে, ১৭ জুন রাঙাপানিতেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় ১০ জন রেলযাত্রীর। পরপর এরকম ঘটনায় রেলের সুরক্ষা ও সার্বিক পরিষেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে রেল বরাবর দাবি করে চলেছে, যাত্রী সুরক্ষার বিষয়টিতেই তারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।