• অসুখ শুনলেই ছুটে আসতেন, তরুণীর মৃত্যুতে মুহ্যমান পাড়া
    বর্তমান | ১০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: তিনতলা বাড়ির ছাদ নানা ধরনের ফুলে পরিপূর্ণ। তালবন্ধ ঘরের সামনে টবেও ফুটে রয়েছে টগর। মাঝেমধ্যে পরিচর্যা করতেন তরুণী। তিনি আর বাড়ি ফিরবেন না। ফিরেছে তাঁর মৃতদেহ। শোকের ঝড় বইছে গলি থেকে রোয়াকে!   

    পাড়ার মেয়ে চিকিৎসক হয়েছে। আপদে বিপদে যে কেউ পৌঁছে যেত বাড়ি। হাসি মুখে চিকিৎসা করতেন ফুটফুটে তরুণী। এমনকী, পরিচিত কেউ অসুস্থ হলে স্টেথো নিয়ে সটান বাড়িও হাজির হয়ে যেতেন। নিজের কাছে ওষুধ থাকলে দিয়ে দিতেন। কোনও পারিশ্রমিক নিতেন না। বাড়িতে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। কর্তব্যরত অবস্থায় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সহজ সরল মেয়ের এই পরিণতি মানতে পারছেন না এলাকাবাসী। কারও চোখে জল। কেউ দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন। সকলেই বলছেন, মর্মান্তিক ঘটনার পিছনে বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে। অপরাধীদের কড়া শাস্তি দাবি করেছেন সকলেই। পিসতুতো দাদা বললেন, বোন আমাদের পরিবারের গর্ব ছিল। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি ওকে হারাব ভাবিনি। 

    নাটাগড় এলাকার বাসিন্দা ওই জুনিয়ার ডাক্তার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল এই পরিবারের। প্রতিবেশী মিঠুন সাহা বলেন, মৃত্যুর খবর শোনার পর আর স্থির থাকতে পারছি না। দোকান বন্ধ করে চলে এসেছি। বাড়িতে ঢুকতে পারছি না। এত মাটির মেয়ে আমরা দেখিনি। রাস্তা দিয়ে হাঁটলে সবার সঙ্গে কথা বলত। বাড়ির কারও সমস্যার কথা শুনলে চলে আসত। এক টাকাও কখন ওকে দিতে পারিনি। চোখের জল মুছে বললেন, এত ভালো মনের মেয়েটার সঙ্গে এমন ঘটবে দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। বাড়ির অদূরের দোকানদার সুমন সাহা বলেন, প্রেশার বাড়ার সমস্যা নিয়ে ওর কাছে গিয়েছিলাম। ও আমাকে ঘরে বসিয়ে ইসিজি টেকনিশিয়ানকে ডেকে পাঠিয়ে পরীক্ষা করেয়েছিল। রাস্তায় দেখা হলে শরীরের খোঁজ নিত। দোষীদের কঠোর সাজা চাই। 
  • Link to this news (বর্তমান)