• বছর ঘুরলেও যাদবপুর মেইন হস্টেল চত্বরে বসেনি সিসি ক্যামেরা, ক্ষোভ
    বর্তমান | ১০ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: যাদবপুরের হস্টেলে প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে র‌্যাগিং ও খুনের অভিযোগ ওঠেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই মর্মান্তিক ঘটনার বছর ঘুরল। কিন্তু, হস্টেলে ছাত্রদের নিরাপত্তা এখনও সেই ‘দাদা’দেরই দস্তানাবন্দি! ক্যালেন্ডারের পাতা বদলালেও মেইন হস্টেলে ছাত্রদের বিরোধিতায় এখনও বসানো গেল না সিসি ক্যামেরা। তা নিয়ে নবাগত ছাত্রদের জন্য আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু। অভিভাবক মহলেও এই নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। 

    ২০২৩ সালের ৯ আগস্ট। রাত ১১টা নাগাদ মেইন হস্টেলের দোতলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল নদীয়ার নবাগত ছাত্রের। এরপরেই তোলপাড় হয় গোটা রাজ্য। খুনের অভিযোগে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল কলকাতা পুলিসের হোমিসাইড শাখা। ৮৯ দিনের মাথায় আদালতে সব ধৃতের বিরুদ্ধেই খুনের মামলায় চার্জশিট পেশ করে লালবাজার। সেই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া এখনও আদালতের জিম্মায়। এই ঘটনার পর র‌্যাগিং রোধে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও হস্টেল চত্বরে নজরদারির দাবি ওঠেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তদন্ত কমিটিও গঠিত হয়। সেই কমিটি নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ও মেইন হস্টেল সহ সমস্ত ছাত্রাবাস সিসি ক্যামেরার নজরবন্দি করতে হবে। কিন্তু, এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন ছাত্রছাত্রীদেরই একাংশ। বিরোধিতা সত্ত্বেও পঠনপাঠন চত্বর ক্যামেরায় মুড়ে ফেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে নজরদারির বাইরে হস্টেল চত্বর। শুধু গেটে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।

    শুক্রবার যাদবপুরের মেইন হস্টেলে গিয়ে দেখা গেল, মূল ফটকে পোস্টার ঝুলছে। তাতে লেখা— ‘বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষেধ’। তবে হস্টেল চত্বরে ঢুকে গেলেও বাধার মুখে পড়তে হয়নি। শুধু তাই নয়, সেখানে ছিলেন না কোনও নিরাপত্তারক্ষী। ভিতরে পড়ে রয়েছে বিভিন্ন নেশার সামগ্রী। অর্থাৎ, যাদবপুরের হস্টেল যেখানে ছিল সেখানেই রয়েছে। স্বপ্নদীপের মৃত্যুতেও বদল হয়নি সার্বিক পরিস্থিতির। স্বপ্নদীপের বাবার রামপ্রসাদবাবুর কথায়, জলজ্যান্ত ছেলেটা আমার চলে গিয়েছে। একবছর হল। সেই সন্ধ্যার কথা আমি জীবনে ভুলব নো। আমাদের ফোন করেছিল ও বলেছিল। হস্টেলে আর থাকব না। আমাকে নিয়ে যাও। কিন্তু, ওর ফোন নিয়ে নেয় ওরা। বেঘোরে মারা গিয়েছে ছেলেটা। আমি দোষীদের শাস্তি চাই। একইসঙ্গে, নিরাপত্তার অভাব নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি দেখার। একটা ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। নজরদারি না করলে ফের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)