আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। শনিবার সকাল থেকেই কর্মবিরতি চালাচ্ছেন হাসপাতালের পিজিটি চিকিৎসকরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস, এসএসকেএম থেকে শুরু করে বিভিন্ন জেলায় কর্মবিরতির পথে হাঁটছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এবার জুনিয়র চিকিৎসকদের বিক্ষোভকে 'যুক্তিসঙ্গত' বললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মনে হচ্ছে আমার পরিবারের কেউ হারিয়ে গিয়েছেমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
শনিবার একটি বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমকে ফোনে তিনি বলেন, 'এই মৃত্যু খুবই অমানবিক, নক্কারজনক, নৃশংস। মনে হচ্ছে আমার পরিবারের কেউ হারিয়ে গিয়েছে। জুনিয়র ডাক্তাররা যে ক্ষোভ দেখাচ্ছেন তা সঙ্গত বলে মনে করি। তাঁরা যে দাবিগুলি করছেন সেগুলির সঙ্গে আমি একমত। তাঁরা যা দাবি শুক্রবার পর্যন্ত করেছিলেন, তা মেনে নিয়েছে পুলিশ। আমি কাল ঝাড়গ্রামে ছিলাম। রাস্তায় আসতে আসতে খবর রাখছিলাম। ওই মহিলা চিকিৎসকের বাবা-মায়ের সঙ্গেও কথা বলেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্টে এই মামলা নিয়ে এসে প্রয়োজনে ফাঁসির আবেদন জানানো হোক। যে কালপ্রিট এই ঘটনা ঘটিয়েছে তার কোনও ক্ষমা নেই। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ব্রেক থ্রু পাওয়া গিয়েছে বলে আমি মনে করছি।'
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংযোজন, 'প্রতিটা হাসপাতালে যাতে চিকিৎসকদের গায়ে কেউ হাত না দেয় সেই জন্য আমাদের তরফে ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের যেমন দায়িত্ব রয়েছে তেমন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব রয়েছে। তাদের তরফে কোনও গাফিলতি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। যদি ছাত্ররা মনে করে এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতি আস্থা নেই তাহলে তারা যে কোনও এজেন্সির কাছে যেতে পারে। আমি ইতিমধ্যেই ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্টে মামলাটির বিচারের করার কথা বলেছি।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দোষীরা যাতে দ্রুত শাস্তি পায় সেই জন্য সমস্ত কিছু পদক্ষেপ করা হবে। আমাদের কিছু লোকানোর নেই। আমি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। অপরাধী যেই হোক, তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে ফাঁসির পক্ষে নই। কিন্তু, এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত তৈরি করতে ফাঁসির দাবি করব। জুনিয়র চিকিৎসকরা দায়িত্ববান। তারা পরিষেবাটা চালু করুন, এই আবেদন জানাব।'
এই ঘটনায় যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার ঘটনাস্থলে যাতায়াত ছিল বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি জানান, জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে তিনি রয়েছেন। আরজি করের জায়গাটা একটু বাড়ানোর প্রয়োজন। ট্রাম ডিপোর জায়গা সংশ্লিষ্ট হাসপাতালকে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।