এই সময়: নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন আগেও উঠেছিল। কিন্তু বছর একত্রিশের এক অন-ডিউটি চিকিৎসকের রহস্যমৃত্যুর পরে নিরাপত্তা নিয়ে সেই প্রশ্ন আরও বড় করে দেখা দিলো আরজি কর হাসপাতালে। কারণ, চিকিৎসকের মৃত্যু ঘিরে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ উঠেছে। কেন একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেও কোনও নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা গেল না গত তিন বছর ধরে, কেনই বা সিসিটিভি লাগানো হচ্ছে না এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায়, সে প্রশ্নে সরব হয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদের একটা বড় অংশ।ক্ষুব্ধ পিজিটি, ইন্টার্নরা নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতির ডাকও দিয়েছেন। কেন নিরাপত্তার কথা বার বার উঠছে, তার কারণ হিসেবে সাম্প্রতিক একটি ঘটনার কথাও তুলে ধরেছেন পিজিটি-দের মতো স্নাতকোত্তর পড়ুয়া চিকিৎসকরা। তাঁরা জানান, মাস তিনেক আগেও এক তরুণী চিকিৎসক যখন রাতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন অন-কল রুমে, তখন ভোররাতের দিকে তিন মদ্যপ ওই ঘরে ঢুকে পড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন।
একা থাকা ওই প্রথম বর্ষের পিজিটি মারাত্মক ভয় পেয়ে যান। কোনও ক্রমে বিপদ কাটিয়ে বেরিয়ে আসতে পারলেও সে সময়েও ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল পিজিটি-দের মধ্যে। তখন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণও করা হয়। কিন্তু তার পরেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ।
তবে শুধু সেমিনার রুম কিংবা অন-কল ডিউটি রুমেই নয়, আরজি করের বিভিন্ন ভবনেরই বিস্তীর্ণ এলাকায় না আছে নিরাপত্তা রক্ষী, না রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। তাই এ নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স, মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার, সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের মতো চিকিৎসক সংগঠনগুলি।
মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক তথা আরজি করের প্রাক্তনী বিপ্লব চন্দ্র এক প্রেস বিবৃতিতে জানান, স্নাতকোত্তর ছাত্রীর এই অস্বাভাবিক রহস্যমৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে আজ, শনিবার রাজ্যজুড়ে সব মেডিক্যাল কলেজে কালা দিবস পালন করার জন্য রাজ্যের সমস্ত নাগরিকের কাছে তাঁরা আবেদন জানাচ্ছেন।
সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস দাবি করেন, ‘হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের, বিশেষত যাঁরা মহিলা, তাঁদে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই হবে সরকার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।’