এই সময়, কালনা: ষষ্ঠ বা ফাইনাল সেমেস্টারের ফি জমা পড়েছে মে মাসে। পরীক্ষাও হয়ে গিয়েছে মাসদুয়েক আগে। চলতি মাসে রেজ়াল্ট বেরোনোর কথা। আর তার আগেই মাথায় হাত পড়ল কালনা কলেজের ১৭৬ জন ছাত্রছাত্রীর।কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই ছাত্রছাত্রীদের ফাইনাল সেমেস্টারের ফি কলেজের অ্যাকাউন্টে জমাই পড়েনি। ১৭৬ জনের নামের তালিকা কলেজের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। ওই পড়ুয়াদের দাবি, স্থানীয় সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে তাঁরা কলেজের পোর্টালে অনলাইনে ফি জমা করেছেন। ট্রানজাকশন আইডি সমেত রসিদের পিডিএফ রয়েছে তাঁদের কাছে।
সেই রসিদ ও ট্রানজাকশন আইডি জাল বলে জানিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ তাপস সামন্ত বলেন, ‘সাইবার ক্যাফেতে ছাত্রছাত্রীরা প্রতারণা চক্রের শিকার হয়েছেন।’ যদিও শুক্রবার রাত পর্যন্ত কালনা মহকুমার কোনও থানায় এ নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েনি। মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন ওই ১৭৬ জন ছাত্রছাত্রীকে কালনা কলেজে বৈঠকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষ ছাড়াও তাঁদের সঙ্গে এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি তাপস কার্ফা ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা। ছাত্রছাত্রীদের জানানো হয়, ফি জমা না করলে রেজ়াল্ট পেতে সমস্যা হতে পারে। অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে ফি জমা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ৪৬ জন পড়ুয়া এ দিন ফি জমাও করেন। আবার ছাত্রছাত্রীদের একাংশ উত্তেজিত হয়ে কলেজের একটি ঘরে ভাঙচুর চালান বলে জানা গিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক ছাত্রী বলেন, ‘আমরা ৪ বন্ধু মিলে কলেজেরই এক ছাত্রের সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে ফি জমা করেছিলাম। ফি কেন জমা পড়েনি ওই ছেলেটিকে তা জিজ্ঞাসা করলে বলে, আমাদের এ নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে না। ওরা নাকি কলেজের সঙ্গে বোঝাপড়া করে নেবে। তার পর চাপাচাপি করাতে শেষমেশ আমাদের টাকা ফেরত দিয়েছে।’
আর এক ছাত্রীর অভিযোগ, কলেজ কতৃর্পক্ষর সঙ্গে বৈঠকে যেতে বারণ করে তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয়েছে সাইবার ক্যাফের তরফে। জানা গিয়েছে, ষষ্ঠ সেমেস্টারের জন্য সায়েন্স ও জিওগ্রাফি অনার্সের ফি ২,৬৩৫ টাকা। সায়েন্স পাস কোর্সের ফি ২,২৯৫ টাকা। আর্টস ও কমার্স বিভাগের অনার্সের ফি ১,১৩৫ টাকা এবং এই দুই বিভাগে পাস কোর্সের ফি ১,০৭৫ টাকা।
কলেজ অধ্যক্ষর বক্তব্য, ‘এর আগে ফার্স্ট সেমেস্টারের ১১৯ জনের ফি-এর টাকাও এ ভাবে কলেজের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। ওরাও কোনও সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে অনলাইন পেমেন্ট করে প্রতারিত হয়েছিল। আজ বৈঠকে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম, ধাত্রীগ্রাম ও সমুদ্রগড়ের কয়েকটি সাইবার ক্যাফেতে প্রতারিত হয়েছে ওরা। জাল ট্রানজাকশন আইডি সমেত রসিদ দেওয়া হয়েছে ওদের।’