এই সময়, ঝাড়গ্রাম: আশা দেখিয়েও এ বারের অলিম্পিক্স থেকে তিরন্দাজিতে পদক আসেনি। তবে জঙ্গলমহলের তিরন্দাজরা স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন। একদিন এমন আসবে, যে দিন জঙ্গলমহলের ছেলেমেয়েরা তিরন্দাজিতে অলিম্পিক্সে যাবে— এমনটাই বিশ্বাস মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুক্রবার ঝাড়গ্রামে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে এ কথা বলেন তিনি।এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই মমতার উদ্যোগে ঝাড়গ্রামে তৈরি করা হয়েছে আর্চারি অ্যাকাডেমি। এখানকার প্রশিক্ষিত তিরন্দাজেরা জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা থেকে পদক আনছেন বলেও এ দিন জানান মুখ্যমন্ত্রী। ক্রীড়া ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সে কথা স্মরণ করিয়ে মমতা বলেন, ‘আমার মনে আছে, বছর ২০-২৫ আগে যে অলিম্পিক্স হয়েছিল, তখন আমি কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলাম। তখন থেকে আগামী ২০ বছর মেয়াদের জন্য আমি পরিকল্পনা করেছিলাম। আমার পরিকল্পনা ছিল, অ্যাকাডেমি তৈরি করে প্লেয়ার তৈরি করা। যাতে ২০-২১ বছর বাদে ভারতীয় খেলোয়াড়রা বিশ্ব মঞ্চে সাফল্য পেতে পারেন।’
এর পরেই তিনি বলেন, ‘একদিন আসবে, যে দিন জঙ্গলমহলের তিরন্দাজেরা অলিম্পিক থেকে পদক আনবেন। সে লক্ষ্যেই ঝাড়গ্রামে তৈরি করা হয়েছে আর্চারি অ্যাকাডেমি।’ জঙ্গলমহলের ছেলেমেয়েরা ফুটবলের পাশাপাশি তিরন্দাজিতেও পটু। ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রামের বাসিন্দা মনিকা সরেন, সুপর্ণা সিং-রা তিরন্দাজির জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন।
এমনকী, আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতাতেও নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন তাঁরা। এখানকার প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের কথা জানতে পেরে মমতা ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে ঝাড়গ্রামে ‘বেঙ্গল আর্চারি অ্যাকাডেমি’র উদ্বোধন করেন। ওই সময়ে রাজ্যের বাছাই করা ১৬ জন ছেলে ও ১৬ জন মেয়েকে নিয়ে শুরু হয় তিরন্দাজির প্রশিক্ষণ। বর্তমানে সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে।
তাঁদের মধ্যে ৩১ জন ছেলে এবং ১৮ জন মেয়ে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই অ্যাকাডেমি থেকে প্রশিক্ষিণ প্রাপ্তরা ২০১৯ সাল থেকেই রাজ্য ও জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় নিয়মিত সাফল্য পাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মমতার নির্দেশে পুলিশ ‘জঙ্গলমহল কাপ’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এখানকার প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের চাকরিরও ব্যবস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড়দের চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। এদিন সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গলমহল কাপের সেরাদের কেউ যদি চাকরি না পেয়ে থাকেন, তা হলে পুলিশ সুপারকে বলব, নথিপত্র আমার কাছে পাঠান। তাঁরা দ্রুত নিয়োগপত্র পাবেন।’