• বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বহিষ্কৃত কর্মীদের বিক্ষোভ, সরগরম জেলা সদর ...
    আজকাল | ১১ আগস্ট ২০২৪
  • মিল্টন সেন, হুগলি: একদিকে দলীয় পতাকা হাতে বহিষ্কৃত বিজেপি কর্মীরা জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব। বিক্ষোভ দেখলেন চুঁচুড়া ঘড়ির মোড়ে। নেতৃত্ত্বের বিরুদ্ধে তুললেন একাধিক অভিযোগ। অপরদিকে দল থেকে বহিষ্কৃতরা দলীয় পতাকা ব্যবহার করায় আইনি ব্যবস্থার হুমকি বিজেপি নেতৃত্বের। বহিষ্কৃত কর্মী এবং দলীয় নেতৃত্বের তরজায় সরগরম জেলা সদর।

    ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার ৫ আগস্ট। সেদিন হুগলি জেলা বিজেপি কার্যালয়ে জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি গোপাল উপাধ্যায়কে নিগ্রহ করা হয়। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই কর্মীদের হাতে নেতা নিগ্রহের সেই ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিও পৌঁছয় জেলা নেতৃত্ত্বে তথা বিজেপি রাজ্য দপ্তরে। তার পরেই রাজ্য নেতৃত্ত্বের নির্দেশে বিজেপির অভিযুক্ত ওই দুজন সক্রিয় কর্মী শাশ্বত ব্যানার্জি ও শুভজিৎ মল্লিককে বহিষ্কার করেন হুগলি জেলা বিজেপি সভাপতি তুষার মজুমদার। এরই প্রতিবাদে চুঁচুড়ার ঘড়ির মোরে শাশ্বত ও শুভজিৎ কয়েকজন বিজেপি কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপির দলীয় পতাকা হাতে জেলা নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়।

    বহিষ্কৃত বিজেপি দলের ওই দুই কর্মীর দাবি, কোনও রকম টার্মিনেশন লেটার তাঁরা হাতে পাননি। অথচ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন তাঁদের দু'জনকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত কর্মীদের দাবি, বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বই তৃণমূলের সাথে আঁতাত করে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী লকেট চ্যাটার্জিকে হারিয়েছে। শুভজিৎ মল্লিক বলেন, তাঁদের সঙ্গে জেলা নেতৃত্ত্বের মূল অশান্তির কারণ এটাই। জেলা নেতৃত্ব চায়নি, হুগলি লোকসভায় লকেট চ্যাটার্জি জিতুক। কিন্তু তাঁরা সৎ কর্মী। নিষ্ঠা সহকারে কাজ করেছেন। চুঁচুড়া বিধানসভায় ভাল ফলাফল হয়নি। জেলা সভাপতি তুষার মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ দু'জন মিলে তাঁদের ব্যবহার করে দল বিরোধী অনেক কাজ করিয়েছেন। তাঁরা দুজন পরিস্থিতির শিকার।

    জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেছেন, দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে কেউ যদি দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চান, যারা এই দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে এই কাজ করেছেন দলের তরফে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হবে। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সপ্তগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যোগের তথ্য সম্পূর্ণই মিথ্যা। এটা বখরা নিয়ে ওদের দলের ঘরোয়া কোন্দল। এই সমস্যা নির্বাচনের আগে থেকেই চলছিল। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হারবে এটা সবাই জানতো। কারণ বিজেপি নেতাদের একাংশ চাইছিল না ওদের প্রার্থী জিতুক। ফলে নির্বাচনের আগে ওদের দলে সক্রিয় কর্মীর থেকে বিক্ষুব্ধদের সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হয়ে গেছিল। প্রকাশ্যেই অনেক বিজেপি নেতাকে প্রার্থীর বিরোধিতা করতে দেখা গেছে। অধিকাংশ বিজেপির নেতা কর্মী নির্বাচনে কাজ করেননি। তাই জেতা আসন হাতছাড়া হয়েছে। আরও একটা কারণ ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়ে ভুল করেছিল। এবারে সেই ভুল শুধরে নিয়েছে। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের ভোটদাতারা প্রমাণ করেছে, বাংলায় মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্ত্বে তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব নেই।
  • Link to this news (আজকাল)