• 'কেন্দ্রকে সমর্থন দেবে তৃণমূল', আরজি কর-কাণ্ডের পর কী দাবি করলেন অভিষেক?
    আজ তক | ১১ আগস্ট ২০২৪
  • আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্ষণের মতো ঘটনা রুখতে কড়া আইন আনার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি। শনিবার ডায়মন্ড হারবারে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক করেন অভিষেক। সেই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আরজি কর হাসপাতাল নিয়ে মন্তব্য করেন। অভিষেক বলেন, 'যত দ্রুত সম্ভব দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই দোষীর। এসব কাজ যারা করে তাদের সমাজে থাকার অধিকার নেই।'

    ধর্ষণের মতো ঘটনা রুখতে আইন সংশোধন করা উচিত বলেও মনে করেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। অভিষেক বলেন, 'দেশের আইন এমন আপনি কিছু করতে পারবেন না। ধর্ষকের কোনও জাত হয় না। তার পরিচয়টা এখানে বিচার্য নয়। এসব ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।'

    ধর্ষণের মতো ঘটনা রুখতে আইন সংশোধনের প্রয়োজন। অর্ডিন্যান্স আনা উচিত বিজেপির। ৬ মাস পরে বিল আনা উচিত। যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়। চাইলেই করা যায়। সব দলের তাতে সমর্থন করা উচিত। তৃণমূল ও কংগ্রেসেরও সমর্থন করা দরকার। সিপিএমের উচিত সেই বিলকে সমর্থন করা। সেটা না করে আমরা রাজনীতি করছি। কেন ৫-৬ বছর লাগবে ট্রায়াল হতে? একটা মায়ের কোল খালি হয়ে গেল, বাবা তাঁর মেয়ে হারালেন। বাবা-মায়েদের কাছে সন্তানের দাম কী তা তাঁরাই জানেন। এই ধরনের ঘটনা রোখার জন্য সবার দায়িত্ব রয়েছে। রাজনৈতিক দলের, সাংবাদিকদের, বিচারবিভাগের জনপ্রতিনিধিদেরও দায়িত্ব রয়েছে। সমষ্টিগতভাবে সবাইকে করতে হবে। সব কিছু নিয়ে রাজনীতি করা হবে কেন?'

    আরজি করের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়ে দিয়েছেন যে সিবিআই তদন্তে তাঁর আপত্তি নেই। এই বিষয়ে অভিষেক বলেন,' সিবিআই তদন্ত করলে কি মেয়েটা ফিরে আসবে? কেউ কি বলতে পারবে এসব ঘটনা আর ঘটবে না। যারা বিজেপি-সিপিএমের পতাকা নিয়ে ঘুরছে তারা কি বলতে পারবে। এটা উত্তরপ্রদেশ হলে মৃতদেহটাও পাওয়া যেত না। হাথরসে কী হয়েছিল মনে আছে। তাই আইন না পরিবর্তন করলে পরিবর্তন হবে না।'

    এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ একজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, মহিলা চিকিৎসককে যৌন নির্যাতন করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। হেডফোনের একটি ছেঁড়া অংশের সূত্র ধরেই অভিযুক্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে দেখা যায়, সঞ্জয় রায় রাত ৩টার পর সেমিনার হলে প্রবেশ করে এবং ৪৫ মিনিট পরে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে।

    পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের গতিবিধি সন্দেহজনক ছিল এবং তিনি অপরাধের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, সঞ্জয় রায় একজন সিভিক ভলান্টিয়ার, যিনি ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় পুলিশকে সহায়তা করতেন।  অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার চাকরি পেয়েছিল ২০১৯ সালে। সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে প্রথমে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দল যোগ দিয়েছিল। পরে তাকে পাঠানো হয় পুলিশের ওয়েলফেয়ারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুসারে, তরুণী চিকিৎসকের চোখ, মুখ, গোপনাঙ্গ-সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পুলিশের অনুমান, ধর্ষণের পর তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বলেছেন, 'এটি আমার ব্যক্তিগত ক্ষতির মতো। আমি এই মামলাটি দ্রুত বিচার আদালতে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছি এবং প্রয়োজনে অভিযুক্তদের ফাঁসি দেওয়া হবে।'
  • Link to this news (আজ তক)