এদিন অভিষেক বলেন, “সত্তর কোটি টাকার নতুন প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হলো এবং পঁচাত্তর কোটি টাকার কংক্রিটের রাস্তা উদ্বোধন হলো। নির্বাচন শেষের দু’মাসের মধ্যে প্রায় ১৪৫ কোটি টাকার কাজের উদ্বোধন হলো অর্থাৎ দিনে প্রায় আড়াই কোটি টাকার কাজ হলো। আজ ডায়মন্ড হারবারকে এই জায়গায় নিয়ে আসতে পেরেছি এখানের মানুষের সাহায্যেই।” এদিন গ্রামীণ স্বাস্থ্য খাতের আলোচনায় অধিক গুরুত্ব দেন সাংসদ। যুবরাজ পর্যবেক্ষণ করেছেন, গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশা। গ্রাম অঞ্চলের কোনায় কোনায় পৌঁছায় না স্বাস্থ্য পরিষেবা। এ প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, “নবজোয়ার যাত্রার সময় আমি লক্ষ্য করেছি, জনসাধারণ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিষেবা ঠিক মতো পান না। প্রতিনিয়ত প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কার্যের তদারকির মাধ্যমে তার পরিষেবা প্রদান ব্যবস্থাকে সুনিশ্চিত করতে হবে।” এই সমস্যার সমাধান বাতলে দিয়ে অভিষেক পরক্ষণেই বলেন, “কিছু মাস ধরে আমি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবার মানকে উন্নত করার প্রয়াস করছি। আমি এ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ রাখছি।”
এদিনের বৈঠক থেকে অভিষেক জানিয়ে দেন, চলতি বছরের আগামী সেপ্টেম্বর মাসেই আরেকটি প্রশাসনিক বৈঠকের আয়োজন করবেন তিনি। মূলত এদিন যে সকল প্রশাসনিক স্তরের বার্তা অভিষেক দিলেন, তারই বিশ্লেষণ করবেন আগামী বৈঠকে। পাশাপাশি নিজ সংসদীয় এলাকা ডায়মন্ড হারবারের উন্নয়ন প্রসঙ্গেও এদিন প্রশাসনিক স্তরের আলোচনা সাড়েন অভিষেক। স্বভাবতই যার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল অভিষেকের মস্তিষ্ক প্রসূত ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’। কেবল দলীয় কর্মী এবং প্রশাসনিক স্তরে বিশেষ বার্তা দেওয়া নয়, আগামী পাঁচ বছরে ডায়মন্ড হারবারের জন্য কি কি উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গৃহীত হবে, তারও রূপরেখা নির্মাণ করেন যুবরাজ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচন শেষে নিজ সংসদীয় এলাকার জন্য এটিই ছিল অভিষেকের প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক। আমতলার ‘সমন্বয়’ প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার পূর্বে এদিন অভিষেককে স্বাগত জানান ডায়মন্ড হারবারবাসী। রাস্তার দু’ধারে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে ঢাক বাজিয়ে যুবরাজকে বরণ করে নেন অভিষেকের ‘পরিবার’ অর্থাৎ তাঁর সংসদীয় এলাকার বাসিন্দাগণ।
আরজি কর হাসপাতালে ছাত্রী খুনের ঘটনায় এদিন সরব হন অভিষেক। তিনি শুরুতেই হাসপাতালে নজরদারির ব্যবস্থার দিকে আঙ্গুল তুলে বলেন, “কেন একটা হাসপাতালে রাতে কেউ অবাধে যাতায়াত করবেন? নজরদারির ব্যবস্থাকে কেন জোরদার করা হলো না?” এরপরই ধর্ষকদের এনকাউন্টার করার নিদান শোনালেন তিনি। তাঁর ভাষায়, “আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন না আসলে এই ধরণের অপরাধ ঠেকানো যাবে না। আইনসভায় কঠোর আইন প্রণিত না হলে এই অপরাধ বন্ধ হবে না। এই উত্তরপ্রদেশ হলে মৃতদেহও খুঁজে পাওয়া যেত না! এমন কঠিন আইন আনা দরকার যেখানে সাত দিনের মধ্যে এই খুনি এবং ধর্ষকদের এনকাউন্টার করে মারা উচিৎ। কেন সাত, আট বছর ধরে ট্রায়াল চালানো হবে? একজন অপরাধীকে জেলে রাখা হলে তার প্রতিদিনের খাবার খরচ ২০০ টাকা, বার্ষিক খরচ হয় ৭৩ হাজার টাকা! সাত বছর সেই অপরাধীর ট্রায়াল চললে পাঁচ লক্ষ টাকার খরচা। কেন এতো খরচা করা হবে? এই বিপুল টাকায় তিনটে গরিব মানুষের বাড়ি হয়ে যাবে। কেন্দ্র সরকার পারে না এই কঠিন শাস্তির বিল আনতে? পারিপার্শ্বিক তথ্যের বা প্রমানের ভিত্তিতে ধর্ষককে এনকাউন্টার করা হোক সাত দিনের মধ্যে, এই বিল কেন্দ্র আনতে পারে এবং তৃণমূল তাতে সমর্থন জানাতে পারে।”