নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্ৰাম জেলাজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একটি হাতির দল। হাতির তাণ্ডবে শালবনী পঞ্চায়েত এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমিতে ধানগাছের চারা নষ্ট হচ্ছে। হাতির হানা ঠেকাতে চাষিরা গাছের ডালে মাচা বেঁধে পাহারা দিচ্ছেন। বনদপ্তরকে পাশে না পাওয়ায় চাষিদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
ঝাড়গ্ৰাম ডিভিশনে থাকা হাতির দলটি লোকালয়ে ঢুকে গত কয়েকদিন ধরে বাড়ি ভাঙচুর চালাচ্ছে। বনদপ্তরের কর্মী ও হুলিয়া পার্টির সদস্যরা হাতির দলটিকে স্থানীয় জঙ্গলে ঢোকানোর চেষ্টা করছেন। হাতির দলটি এবার জমির ধানের চারা খেতে গ্ৰামে হানা দিচ্ছে। হাতির তাণ্ডবে শালবনী পঞ্চায়েত এলাকায় বিঘার পর বিঘা ধানের জমি নষ্ট হচ্ছে। চাষিরা উপড়ে দেওয়া ধানের চারা নতুন করে বসাচ্ছেন। যদিও সেই ধানের চারা থেকে ভালো ফলন না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় চাষিরা হাতির হানা ঠেকাতে গাছের ডালে মাচা বেঁধে রাতপাহারা দিচ্ছেন। হাতি এলাকায় ঢুকলেই গ্ৰামবাসীদের সতর্ক করা হচ্ছে। মশাল জ্বালিয়ে বাজি ফাটিয়ে হাতি তাড়ানো হচ্ছে। শালবনী পঞ্চায়েতের শিরশি গ্ৰামের চাষি জয়দেব মাহাত বলেন, এবছর বেশ কয়েক বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। গতকাল রাতে একটা হাতির দল জমিতে নেমে ধানের চারা উপড়ে নিয়েছে। জমির আশপাশে পড়ে থাকা কিছু ধানের চারা নতুন করে রোপণ করেছি। গোড়া নড়ে যাওয়ায় এই ধান থেকে ভালো ফলন হবে না। আগেও ধানের চারা উপড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানানো হয়েছিল। সেই ক্ষতিপূরণ আজ অবধি মেলেনি। আর এক চাষি জয়দেব মাহাত বলেন, চার বিঘা জমিতে এবার ধানগাছ লাগিয়েছি। প্রায় ১০হাজার টাকা খরচ হয়েছে। হাতির দল গত বছর এই এলাকায় মাঠের পাকা ধান খেয়ে নিয়েছিল। এবার ধানের চারা খেতে রাতের বেলায় জমিতে নামছে। ধানের চারা উপড়ে নিচ্ছে। হাতির হানা ঠেকাতে বাধ্য হয়ে গাছের ডালে মাচা বেঁধে রাত পাহারা দিতে হচ্ছে। জমির পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে একটা হাতির দল এখনও রয়েছে। হাতির দলটি এলাকা ছেড়ে না যাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হতে পারছি না। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামসুন্দর মাহাত বলেন, বনকর্মী ও হুলিয়া পার্টির সদস্যরা হাতি তাড়াতে গিয়ে হিতে বিপরীত করছে। তাড়া খাওয়া হাতির দলটি ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। চার পাঁচটি হাতির দল খাবারের সন্ধানে কখনও গ্ৰামে ঢুকে বাড়ি ভাঙচুর করছে কখনও আবার জমির চারাধান খেতে মাঠে নামছে। হাতির ছোট দল যেসব এলাকায় রয়েছে সেখানকার মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না। ঝাড়গ্ৰামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, হাতির একটি দল ইতিমধ্যেই ঝাড়খণ্ডে পাঠানো হয়েছে। আরও একটি দল জেলার সীমানা লাগোয়া কলাইকুণ্ডা রেঞ্জে রয়েছে। ঝাড়গ্ৰাম ডিভিশনের বাঁদরভুলা বিট এলাকায় থাকা হাতির দলটিকে ঝাড়খণ্ডে পাঠানোর পরিকল্পনা চলছে। বনদপ্তর জঙ্গল এলাকার মানুষের ক্ষতি ঠেকাতে সবরকম চেষ্টা চালাচ্ছে।