• পশুপাখির খাদ্যভাণ্ডার বাড়াতে গাছের উপরে বট-পাকুড়-অশ্বত্থের চারা স্থাপন
    বর্তমান | ১১ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: ফাইকাস প্রজাতির বট, পাকুড়, অশ্বত্থ ও ডুমুর গাছের ফল তৃণভোজী বন্যপ্রাণী ও পাখিদের অত্যন্ত প্রিয় খাদ্য। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে এই প্রজাতির গাছ একেবারে কমে আসায় উদ্বিগ্ন বনদপ্তর। তাই জাতীয় উদ্যানের নানা প্রজাতির পাখি ও তৃণভোজীদের খাদ্যভাণ্ডার বাড়াতে বনদপ্তর এসব গাছের চারা লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। তবে মাটিতে পোঁতা হবে না সেই চারা। বরং বড় কোনও গাছের ওপর সেই চারা স্থাপন করা হবে। জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ এই অভিনব প্রকল্পের নাম দিয়েছে ‘ট্রি টপ প্ল্যান্টেশন’। 

    সাধারণভাবে গাছ লাগালে গোরু-ছাগলের উপদ্রব থেকে বাঁচাতে বেড়া দেওয়া হয়। কিন্তু জঙ্গলের ভিতরে গাছের চারা লাগালে তো বেড়া দেওয়া যায় না। জঙ্গলের ভিতরে মাটিতে ফাইকাস প্রজাতির গাছ লাগিয়ে জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ সফল হয়নি। কারণ এই প্রজাতির গাছগুলি মাথা তুলতেই জঙ্গলের তৃণভোজী প্রাণীরা খেয়ে সাবার করে দিয়েছে। সেই জন্য এক মাস আগে জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ জঙ্গলের ভিতরে থাকা বড় বড় গাছের মগডালে বট-অশ্বত্থ-পাকুড়ের চারা লাগিয়ে সফল হয়েছে। দেশের মধ্যে জলদাপাড়া বনাঞ্চলেই প্রথম অভিনব এই পদ্ধতিতে বন্যপ্রাণীদের জন্য ফাইকাস প্রজাতির গাছ বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

    জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও প্রবীণ কাসোয়ান বলেন, বড় গাছের ডালে পরীক্ষামূলকভাবে ফাইকাস প্রজাতির গাছের চারা লাগিয়ে আমরা সফল হয়েছি। আমাদের এই ‘ট্রি টপ প্ল্যান্টেশন’ চলবে।

    জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রথমেই নার্সারিতে ডুমুর, পাকুড়, অশ্বত্থ ও বট গাছের চারা বড় করা হয়েছে। সার ও মাটি মিশিয়ে চটের বস্তায় ভরানো হয়েছে। সার ও মাটি বোঝাই চটের বস্তায় সাইকাস প্রজাতির চারা গাছগুলি রোপণ করে ফলহীন গাছের মগডালে দড়ি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যাতে ঝড় বাতাসে পড়ে না যায়। আর চারাগুলি যাতে জলের অভাবে শুকিয়ে না যায়, তার জন্য বর্ষাকালকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

    জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারী বন্যপ্রাণী সহায়ক নবজিৎ দে বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাদার গাছের উপরে থাকা ফাইকাস প্রজাতির চারা বড় হবে। সেই গাছ থেকে নামবে ঝুড়িও। অচিরেই সেই চারা মহীরুহে পরিণত হবে।  এভাবেই চারা বসানো হয়েছে গাছের উপরে। ছবি বনদপ্তরের সৌজন্যে।
  • Link to this news (বর্তমান)