• লুপ লাইন না করেই টাকা পেল ঠিকাদার সংস্থা! ভর্ৎসনা ক্যাগের,  ডানকুনি শাখা নিয়ে প্রবল অস্বস্তিতে পূর্ব রেল
    বর্তমান | ১১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: বাংলায় একাধিক রেল প্রকল্পে নামমাত্র অর্থ বরাদ্দের সাফাই দিতে গিয়ে রাজ্য সরকারের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছিল রেল। বলা হয়, রাজ্য সরকার ঠিকমতো জমি অধিগ্রহণ করে দিতে পারছে না। তাই প্রকল্পে বরাদ্দও মিলছে না। কিন্তু যেসব প্রকল্প ইতিমধ্যেই চালু অবস্থায় রয়েছে, সেগুলিতে কি রেলের ভূমিকা একেবারে যথাযথ? আপাতত এই প্রশ্নই তুলে দিল ক্যাগ রিপোর্ট। কারণ সম্প্রতি সংসদে পেশ ওই রিপোর্টে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, লুপ লাইন তৈরি না করেও টাকা পেয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা। হয়েছে বিপুল অর্থের অপচয়। এ ঘটনা ঘটেছে ডানকুনি-ভট্টনগর শাখায়। বিষয়টি নিয়ে ক্যাগের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে রেলকে। ফলে প্রবল অস্বস্তিতে পূর্ব রেল। ওই রিপোর্টে ক্যাগ স্পষ্ট জানিয়েছে, এক্ষেত্রে নজরদারি ঠিকমতো হলে প্রায় সাত কোটি টাকা গচ্চা যেত না। 

    ক্যাগ রিপোর্টে জানানো হয়েছে, একটি অতিরিক্ত লুপ লাইনসহ ডানকুনি-ভট্টনগর ভায়া সিসি লিঙ্ক (ওয়েস্ট) ডাবলিং প্রকল্পটি অনুমোদিত হয় ২০১১-১২ অর্থবর্ষে। ২০১৩ সালের আগস্ট মাসে এটি বাস্তবায়নের জন্য ৬০ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ অনুমোদিত হয়। ওই বছরের জানুয়ারি মাসে মাটি পরীক্ষার জন্য পূর্ব রেল এর জিও-টেকনিক্যাল সমীক্ষক সংস্থাকে নিয়োগ করে। কারণ যে অংশ দিয়ে লুপ লাইনটি যেত, তার কাছেই জলাশয় ছিল। যার গভীরতা ছিল প্রায় আট ফুট। ‘এমব্যাঙ্কমেন্ট’-এর জন্য জিও-টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট করতে রেল কর্তৃপক্ষ একইসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টকেও কাজে লাগায়। ২০১৪ সালের আগস্টে তারা ‘পাইলিং’য়ের সুপারিশ করে। সেইমতো ২০১৫ সালের জুলাইয়ে কলকাতার একটি ঠিকাদার সংস্থাকে ৪৯ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকার বরাত দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়। লুপ লাইন তৈরির দায়িত্বও তাদের ছিল।

    ক্যাগ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৭ সালের ৩০ জুন ডানকুনি-ভট্টনগর শাখায় ডাবলিংয়ের কাজ শেষ হয়। ২১ আগস্ট থেকে তা চালুও করে দেওয়া হয়। কিন্তু যা ওই প্রকল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, সেই অতিরিক্ত লুপ লাইনের কাজ এখনও পর্যন্ত শেষ হয়নি। এ কাজের জন্য যে ৬ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ গচ্চা গিয়েছে। রেলের পরিভাষায় ‘ওয়েস্টফুল পেমেন্ট’। এ ব্যাপারে রেলের জবাবকেও যুক্তিহীন এবং যথাযথ নয় বলেই অভিহিত করেছে ক্যাগ। পাশাপাশি অভিযোগ করা হয়েছে, সমীক্ষক দলগুলির সুপারিশ ঠিকমতো মানা হয়নি। এক্ষেত্রে আরডিএসও’র পর্যবেক্ষণেরও উল্লেখ করা হয়েছে ক্যাগ রিপোর্টে। ঠিকাদারির কাজে নজরদারি ঠিকমতো হয়নি বলেই ‘এমব্যাঙ্কমেন্ট’ ব্যর্থ হয়েছে। এটি রক্ষার জন্য চুক্তিমতো পর্যাপ্ত জিনিসপত্র দেওয়াই হয়নি। এর ব্যর্থতার জন্য দায়ভার নির্ধারণ করে বিশেষজ্ঞের মতামতসহ পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে ক্যাগ।
  • Link to this news (বর্তমান)