আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ। এই ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। কীভাবে এমন নৃশংসভাবে খুন করা যায়, তা ভেবে শিউরে উঠছেন প্রায় সকলেই। কী মতামত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ স্মরণিকা ত্রিপাঠীর?
একজন খুনি ও ধর্ষকের মানসিকতা অনেক কিছুর উপরে নির্ভর করে। আমরা যেভাবে, যে পরিবেশে বড় হয়ে উঠি, সেটার একটা বিশাল ভূমিকা থাকে। কেউ যদি ছোটবেলায় দেখে যে বাড়িতে অত্যাচার করে বা হিংস্রতার সাহায্যে কাউকে চুপ করানো হচ্ছে, সে অসংবেদনশীল হয়ে যায় এবং হিংস্রতা তার কাছে স্বাভাবিক লাগবেই। খুব কষ্টের বা দারিদ্রে অথবা ‘রিসোর্স ডেপ্রিভেশনে’ বড় হলেও মানুষের মধ্যে একটা ক্ষমতার চাহিদা থাকে। আবার কর্মক্ষেত্রে ‘পাওয়ার ডায়নামিক’ভীষণভাবে কাজ করে।
নিজের ক্ষমতা বোঝানো বা অন্যকে তার জায়গাটা বুঝিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে জাগে। অনেক সময়ে মেয়েরা বা যে শারীরিকভাবে দুর্বল, সে-ই এই আক্রোশের শিকার হয়। আপাতত জানা নেই যে আগে কোনও কথা কাটাকাটি হয়েছিল কি না। তবে, এটা যে ঠান্ডা মাথার খুন নয় তা বোঝা যাচ্ছে। কাজেই আগের থেকে পরিকল্পিত নয়। কেন রাগের মাথায় হুঁশ হারাল তা বোঝা এখনই সম্ভব নয়। অনেক সময়ে আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও হয়। অর্থাৎ রাগের মাথায় বুঝতে পারেনি কতদূর জল গড়িয়ে যাবে। নিজেকে থামাতে না পেরে মানুষ খেপে গিয়ে হিংস্র হয়ে যায় এবং হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
ফলাফলের কথা ভাবতেই পারে না। আগের থেকে জমে থাকা রাগ, না কি কিছু চাপা দেওয়ার চেষ্টা, তা এখনই বোঝা সম্ভব নয়। আবার পর্ন মানুষের যৌন অন্তরঙ্গতার ধারণাকে বিকৃত করে তোলে। তারা ভিডিওতে দেখলেও যে নিজে করা যায় না, তা বুঝতে পারে না। আমাদের সেক্স এডুকেশনের বেশ অভাব। কাজেই সচেতনতা সেখানেও নেই এবং ‘প্যারাফিলিক ডিসর্ডার’ থাকলেও অনেক সময়ে মানুষ এই রকম নৃশংস কাজ করতে পারে।