রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর স্মরণসভায় আমন্ত্রণ নিয়েও দ্বিধাবিভক্ত সিপিএম। দলের তরফে ঠিক হয়েছে, ২২ আগস্ট তাঁর স্মরণসভা হবে। নেতাজি ইন্ডোর বা নজরুল মঞ্চের মতো বড় কোনও প্রেক্ষাগৃহে সেই অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। তবে সেখানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে দলের অন্দরে। রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, বুদ্ধবাবুর স্মরণ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। তবে দলের আরেকাংশের দাবি, তাঁর শেষযাত্রার সময়ে সারাক্ষণ সঙ্গে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই স্মরণ অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোই স্বাভাবিক সৌজন্য।
তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর হাত থেকেই মুখ্যমন্ত্রিত্বের ব্যাটন স্থানান্তরিত হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে। ২০১১ সালের বাম জমানার সমাপ্তিতে তৃণমূল সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে পূর্বসূরীর প্রতি একটা আলাদা টান থাকা স্বাভাবিক। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর অসুস্থ বুদ্ধবাবুর চিকিৎসার ভার নিতে চেয়েছিলেন মমতা। পাম অ্যাভিনিউয়ের দু কামরার ফ্ল্যাটের বদলে প্রশস্ত সরকারি আবাসনে থাকার প্রস্তাবও দেন। কিন্তু সব প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিলেন আজীবন সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পরিহিত পক্ককেশের বুদ্ধবাবু (Buddhadeb Bhattacharya)।
তবে তাঁর মৃত্যুর পর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে আর কোনও বাধা ছিল না। গত বৃহস্পতিবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণের খবর পেয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলে গিয়েছিলেন তাঁর বাড়িতে। বুদ্ধবাবুর স্ত্রী মীরাদেবী ও সন্তানের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন। সেখান থেকেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। শুক্রবার শেষযাত্রায় যাওয়া পর্যন্ত সর্বক্ষণ খোঁজখবর নিয়েছিলেন মমতা।
তাই বুদ্ধবাবুর স্মরণ অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর পক্ষে সিপিএমের (CPM) একাংশ। তবে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Md. Selim) স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, দলীয় অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আমন্ত্রিত নন। তবে দল হিসেবে তৃণমূল, বিজেপি বা অন্য কোনও রাজনৈতিক শিবিরকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না, তা ঠিক হবে বুধবার। ওই দিন সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক। সেখানেই স্থির হবে বলে খবর আলিমুদ্দিন সূত্রে।