‘ভেতরের লোক জড়িত আছে’, বিস্ফোরক দাবি মৃত চিকিৎসকের মা-বাবার
এই সময় | ১২ আগস্ট ২০২৪
কলকাতা পুলিশ এডিসিপি মুরলীধর শর্মা দেখা করলেন আরজি কর হাসপাতালের মৃত চিকিৎসকের বাবা-মার সঙ্গে। পুলিশকর্তার সঙ্গে আলোচনার পর তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে ‘সন্তুষ্ট’ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকের মা-বাবা। তবে, তদন্তের স্বার্থে পুলিশের সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু তাঁরা সামনে আনতে চাননি। মৃত চিকিৎসকের মা-বাবা সন্দেহ করছেন, এই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত রয়েছেন। এমন পাশবিক অত্যাচার হয়েছে, একজনের পক্ষে সেটা করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন তাঁরা।মৃতার বাবা এদিন বলেন, ‘পুলিশ আধিকারিক আমাদের জানিয়েছেন, আমরা তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। তবে তাঁর সঙ্গে কী কথা হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে আমরা বলতে পারছি না।’ তবে, তদন্ত প্রক্রিয়া সঠিকভাবেই এগোচ্ছে, এতে তাঁরা সন্তুষ্ট বলে দাবি করেন মৃত চিকিৎসকের বাবা। তিনি বলেন, ‘আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপর আস্থা রেখেছি। স্বাভাবিকভাবেই, পুলিশ প্রশাসনের উপর আমাদের আস্থা রয়েছে।’
এই ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি যুক্ত বলে দাবি করছেন তাঁর বাবা-মা। মৃত চিকিৎসকের মা জানান, আরজি কর হাসপাতালের বুকের রোগ নিরাময় বিভাগের সকলের উপরেই তাঁদের সন্দেহ রয়েছে। এই ডিপার্টমেন্টের আরও কেউ যুক্ত থাকতে পারে বলে তাঁরা সন্দেহ করছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তাঁরা পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
চিকিৎসকের বাবার কথায়, ‘আমাদের মনে হচ্ছে, ভেতরের কোনও লোক জড়িত আছে। একাধিক লোক জড়িত আছে। সেই সন্দেহের কথা আমি পুলিশকে জানিয়েছি।’ পুলিশ ইতিমধ্যে সঞ্জয় রায় নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সে জিজ্ঞাসাবাদে নিজের দোষের কথা স্বীকার করেছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। চিকিৎসকের বাবার দাবি, তাকে কেউ যে ‘সুপারি’ দেয়নি এর কি গ্যারান্টি আছে? তাকে ওই কাজের জন্য তো কেউ পাঠাতে পারে।
এর পাশাপাশি তাঁদের মেয়ে মানসিক চাপে ছিলেন বলেও জানান বাবা-মা। আরজি কর হাসপাতালে মন খুলে কাজ করতে পারতো না তাঁদের মেয়ে। উপরমহল থেকে নানারকম ভাবে তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করা হতো। চারজন পুরুষ ডাক্তারের সঙ্গে একজন মহিলা হিসেবে তাঁকে ডিউটি দেওয়া হতো দিনের পর দিন। ছিল না মহিলাদের আলাদা কোনও রুমের ব্যবস্থা। সেইসব কথাও তুলে ধরেন পুলিশকর্তার সামনে। অন্যদিকে, এডিসিপি মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘যে মেয়েটি মারা গিয়েছে, সে আমাদের বোন বা ভাইঝির মতো। দোষীকে শাস্তি দেওয়া হবে। এর শেষ দেখে আমার ছাড়ব।’ আগামীকাল, আরজি কর হাসপাতালে তাঁরা ধরনায় বসবেন বলে জানান চিকিৎসকের মা-বাবা।