• বাড়িতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান, কোভিড-কালের স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন সহকর্মীরা
    এই সময় | ১২ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়, ঘোলা ও মধ্যমগ্রাম: রবিবার দুপুরে বাড়িতে মেয়ের পারলৌকিক কাজ করলেন আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের মা-বাবা। হাতেগোনা পরিবারের লোকের উপস্থিতিতে এ দিন শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়। বাইরের লোকের প্রবেশের অনুমতি ছিল না। দুপুরে সোদপুরের বাড়িতে দেখা করতে এসেছিলেন কামদুনির প্রতিবাদী মুখ মৌসুমি কয়াল ও টুম্পা কয়াল। সঙ্গে ছিলেন কামদুনির নির্যাতিতার দুই ভাইও।তবে নিহত চিকিৎসকের কাকা তাঁদের বলেন, ‘মেয়ের পারিলৌকিক কাজ হচ্ছে। মা-বাবা ভেঙে পড়েছেন। আজ নয়, অন্য দিন ফোন করে আসুন।’ ফলে দেখা না করেই ফিরে যেতে হয় মৌসুমি-টুম্পাদের। পরে মৌসুমি বলেন, ‘ওঁদের কষ্ট আমরা বুঝি। পাশে থাকার বার্তা নিয়ে এসেছিলাম।’

    পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ বলেন, ‘পরিবার চাইছে না কেউ বিরক্ত করুক। তারপরেও কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করতে আসছে।’ জানা গিয়েছে আরজি কর হাসপাতালে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন শুরুর আগে মধ্যমগ্রাম পুরসভা পরিচালিত মাতৃসদন হাসপাতাল কাজ করতেন ধর্ষণ ও খুন হওয়া ওই তরুণী চিকিৎসক। ২০১৯ থেকে ২০২২— তিন বছর এখানে ছিলেন।

    চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবনের শুরুতেই কোভিডের মোকাবিলা করতে হয়েছিল। রোগীর পরিজনের কাছে তিনি পরিবারের একজন হয়ে উঠেছিলেন। সেই সময়ে সোদপুরের বাড়ি থেকে হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্সে রোজ মধ্যমগ্রাম আসতেন। আবার ডিউটি শেষে অ্যাম্বুল্যান্সেই বাড়ি ফিরতেন।

    অ্যাম্বুল্যান্স চালক সমীর ভট্টাচার্য বলেন, ‘কোভিডের সময়ে দিদিকে প্রচুর পরিশ্রম করতে দেখেছি। আমি প্রতিদিন ওঁকে নিয়ে আসতাম, দিয়ে যেতাম। যাওয়া-আসার পথে কথা হতো। উনি বলতেন, যে আদর্শ নিয়ে চিকিৎসক হতে এসেছি, সেটা করতে পারছি।’ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার সুশান্ত পাল বলেন, ‘কোনও ডাক্তারের আসতে দেরি হলে উনি ওয়ার্ড ছেড়ে যেতেন না। অপেক্ষা করতেন। ওঁর দায়বদ্ধতা নিয়ে কোনও কথা হবে না। সেই মানুষের এমন পরিণতি ভাবা যায় না।’

    নিহত চিকিৎসকের সঙ্গে যাঁরা কাজ করেছিলেন, সকলেই শোকে মুহ্যমান। স্মৃতিচারণায় বারবার ফিরে আসছে ফেলে আসা সেই তিন বছরের কথা। মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ বলেন, ‘আমি নানা প্রয়োজনে অনেকবার মাতৃসদনে যাই। সেই সময় ওঁর সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথাও হয়েছিল। সেই সব কথা আজ খুব বেশি করে মনে পড়ছে। উনি ২০২২ সালের মাঝামাঝি এমডি পরীক্ষায় বসার জন্য চাকরি ছেড়েছিলেন।’
  • Link to this news (এই সময়)