LIVE: পদত্যাগ করলেন আর জি কর-এর প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ, ৪ জুনিয়ার ডাক্তারকেও জেরা করছে লালবাজার
আজ তক | ১২ আগস্ট ২০২৪
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। আজ সোমবার থেকে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আবাসিক চিকিৎসকদের সংগঠন 'ফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন' ধর্মঘটের ঘোষণা করেছে। সব সরকারি হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সমিতি এই ধর্মঘটে যোগ দিচ্ছে। এদিকে, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত অপরাধী সঞ্জয় রায় সম্পর্কে অনেক বড় তথ্য উঠে এসেছে। বলা হচ্ছে, অভিযুক্তরা মদ্যপান করার সময় একটি পর্নোগ্রাফিক ছবি দেখে এই অপরাধ করেছে।
আর জি কর-এর প্রিন্সিপালের পদত্যাগ
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ পদত্যাগ করলেন। তরুণী ডাক্তার ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়ার ডাক্তাররা। আর জি কর-এর প্রিন্সিপালের পদত্যাগের দাবি আগেও করেছিলেন ওই মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়ার ডাক্তাররা।
আরজি কর-এ তরুণী ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্টের ৪ জন ইন্টার্ন ডাক্তারকে সমন পাঠাল লালবাজার। ওই ৪ জনই ওই রাতে হাসপাতালে ডিউটিতে ছিলেন। পুলিশের বক্তব্য, এদেরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে।
পর্ন ফিল্ম দেখেছিল সঞ্জয়, মদ্যপ অবস্থায় ছিল
আর জি কর হাসপাতালে তরুণী ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুনের সময় মদ্যপ ছিল ধৃত সঞ্জয় রায়। ঘটনার আগে পর্ন ফিল্মও দেখেছিল। পুলিশ সূত্রের খবর। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, খুনের পর মৃতদেহকে ধর্ষণ করা হয়েছে সম্ভবত।
কর্মবিরতিতে জুনিয়র ডাক্তাররা
মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের প্রতিবা রাজ্যের বহু সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। আপৎকালীন এবং সাধারণ সব বিভাগেই পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে সোমবার থেকে ভোগান্তির মুখে পড়তে হতে পারে রোগী ও তার পরিজনদের। প্রতিবাদে ধর্মঘট শুরু করেছেন আবাসিক চিকিৎসকরা। এই সময়ের মধ্যে, ওপিডি, ইলেকটিভ সার্জারি এবং ল্যাবের কাজ বন্ধ থাকবে।
আরজি কর মেডিকেল কলেজেও কাজ বন্ধ
আরজি করকাণ্ডের প্রতিবাদে লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। শিকেয় উঠেছে রোগী পরিষেবা। সেখানকার চিকিৎসকরা বলছেন, পুলিশ মাত্র একজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার র করেছে, যেখানে এই জঘন্য ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে। তাঁদের দাবি, অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতারের পিছনে পরিকল্পিতভাবে বড় কিছু আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন তদন্ত শেষ করতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। সেই সঙ্গে দেশব্যাপী বিক্ষোভের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। আইএমএ বলেছে, "আমরা দাবি করি যে পুলিশ কর্তৃপক্ষ ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এবং নির্ভুল ভাবে ব্যবস্থা নিক, অন্যথায় আমরা দেশব্যাপী ক্র্যাকডাউন শুরু করতে বাধ্য হব। একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ এবং সংবেদনশীল তদন্ত প্রয়োজন। দোষীদের গ্রেফতার করা উচিত।
৪ দফা দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের
মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার প্রতিবাদ বিক্ষোভে শিকেয় উঠেছে আরজি কর হাসপাতালের রোগী পরিষেবা। রবিবার জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়ে দিলেন, প্রশাসন যদি তাঁদের চার দফা দাবি না মানে, তবে এই পরিস্থিতি আপাতত বদলাবে না। সরকারি হাসপাতালটিতে তাঁরা যে ভাবে জরুরি এবং সাধারণ পরিষেবা দুই-ই বন্ধ রেখেছেন, প্রশাসন তাঁদের দাবি না মানলে, তা আগামী দিনেও চলবে।
আউটডোর বন্ধ আরজি কর হাসপাতালে
আজ আউটডোর কাউন্টার বন্ধ আর জি কর হাসপাতালে। রোগীদের ব্যাপক ভিড়। ডাক্তাররা কর্মবিরতিতে অনড়। চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলতা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট এবং এসিপি পদ থেকে অপসারণ
এই ভয়াবহ ঘটনার পর স্বাস্থ্য দফতর আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ সঞ্জয় বশিষ্ঠকে সরিয়ে দিয়েছে। সেখানে তিনি দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের ডিন বুলবুল মুখোপাধ্যায়কে। শুক্রবার ওই মহিলা চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই সুপারের অপসারণের দাবি ওঠে। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা পর তাকে অপসারণের নির্দেশ জারি করে স্বাস্থ্য বিভাগ। সেই সঙ্গে হাসপাতালের পুলিশ ইনচার্জ এসপি চন্দন গুহকেও সরিয়ে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মদ্যপান করে পর্ন দেখেন, তারপর ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুন
এ মামলার তদন্তে অনেক বড় তথ্য উঠে আসছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত অপরাধী সঞ্জয় রায় মদ্যপান করে পর্ন ফিল্ম দেখার নেশায় আসক্ত ছিলেন। ঘটনার রাতে তিনি একাধিকবার হাসপাতালের ভেতরে আসা-যাওয়া করেছেন। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ, পরিস্থিতিগত প্রমাণ ও সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে অপরাধ নিশ্চিত করা হচ্ছে। ঘটনার দিন রাত রাত ১১টার দিকে মদ খেতে হাসপাতালের পেছনে যান তিনি। সেখানে মদ খেয়ে পর্ন মুভি দেখেন। এরপর ভোর ৪টার দিকে তাকে পেছন দরজা দিয়ে চেস্ট মেডিসিন প্রবেশ করতে দেখা যায়। এরপর ৪টা ৪৫ মিনিটে তাকে সেমিনার হল থেকে বের হতে দেখা যায়।
অভিযুক্ত অপরাধী ঘটনার পর প্রমাণ নষ্টের চেষ্টা করে
অপরাধ করার পর অভিযুক্ত প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করে। পুলিশ প্রমাণ পেয়েছে যা দেখায় যে অভিযুক্তরা অপরাধের স্থান থেকে রক্তের দাগ ধুয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিল। বাড়ি ফিরে অপরাধ করার সময় যে জামাকাপড় পরেছিলেন তাও ধুয়ে ফেলেন। তবে পুলিশ তার জুতো উদ্ধার করেছে, যাতে রক্তের দাগ স্পষ্ট দেখা যায়। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে গেলে সে সম্পূর্ণ মত্ত অবস্থায় ছিল।
প্রাথমিক তদন্তে হত্যার পর ধর্ষণের সন্দেহ
মহিলা চিকিৎসকের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে কলকাতা পুলিশ। অন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন যে পরিস্থিতিগত প্রমাণগুলি সম্ভাব্যতা নির্দেশ করে যে গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত প্রথমে মহিলা ডাক্তারকে হত্যা করেছে এবং তারপর তাকে ধর্ষণ করেছে। হাসপাতালের সেমিনার হলে ডাক্তার একাই ঘুমোচ্ছিলেন। প্রতিবাদ করলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে বলা হয়েছে, আক্রান্তের চোখ ও মুখ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তার মুখে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার গোপনাঙ্গ থেকেও রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। তার পেটে, বাম পা, ঘাড়, ডান হাত, আঙুল এবং ঠোঁটে। আঘাতও ছিল।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোররাতে ওই লেডি ডাক্তারকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। শনিবার সকালে এ ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। প্রাথমিক তদন্তের সময়, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্লুটুথ ইয়ারবাড খুঁজে পেয়েছে, যার মাধ্যমে তারা অভিযুক্তের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। পিজিটি এবং মহিলা ডাক্তাররাও সিসিটিভি ফুটেজ থেকে অপরাধীকে শনাক্ত করেছেন। এর পর অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। এই ধরনের স্বেচ্ছাসেবকরা