• রামপুরহাট মেডিক্যালে ছাত্র আন্দোলন অব্যাহত
    বর্তমান | ১২ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, শান্তিনিকেতন ও রামপুরহাট: আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-ছাত্রের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় উত্তাল গোটা রাজ্য। সেই প্রেক্ষিতে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হল জেলা প্রশাসনের তরফে। জানা গিয়েছে, নতুন করে ৬ জন কনস্টেবল ও একজন এএসআই পদমর্যাদার পুলিসকর্মী এবার থেকে থাকবে হাসপাতালের নিরাপত্তায়। এছাড়া নিরাপত্তার দাবিতে রামপুরহাট মেডিক্যালে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।

    উল্লেখ্য, আর জি করের ঘটনার পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালগুলিতে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উত্তেজনা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালেও এক মাসের মধ্যে চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগীমৃত্যু, চিকিৎসা না পেয়ে প্রসব হওয়ার আগেই সদ্যোজাতের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। দু’টি ঘটনায় রোগীর পরিবারের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চরম অশান্তি হয়। এমনকী হাসপাতালে বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে রোগীর পরিজনদের হাতাহাতিও হয়। এছাড়াও কিছুদিন আগে ইলামবাজারের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে অ্যাসিড ঢেলে মেরে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিল তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সেই সময় ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় হাসপাতাল চত্বরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বোলপুর, শান্তিনিকেতন ও ইলামবাজার থানার পুলিস বাহিনীকে ঘটনাস্থলে আসতে হয়। এছাড়া প্রত্যেক দিনই ছোটখাটো অশান্তি লেগেই থাকে। অন্যদিকে বোলপুর ও তার পার্শ্ববর্তী কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে পাঠরত চিকিৎসক ও বড় সংখ্যক নার্সরা মহকুমা হাসপাতালে হাতে কলমে শিক্ষাগ্রহণ করেন। সন্ধ্যার পরে তাঁরা ফিরে যান। সেই সময় হাসপাতাল ও তার পার্শ্ববর্তী চত্বরে মানুষজনের সংখ্যা কিছুটা কম থাকে। তাই হাসপাতালের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হল। রবিবার থেকেই পুলিস কর্মীরা তাঁদের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। হাসপাতাল লাগোয়া সরকারি কোয়ার্টারে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

    হাসপাতাল সুপার দিবাকর সর্দার বলেন, প্রশাসনের তরফে খুবই ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখানে দূরদূরান্ত থেকে রোগীরা এসে থাকেন। সুস্থ চিকিৎসা পরিষেবা পেতে নিরাপত্তা অত্যন্ত প্রয়োজন।

    এদিকে, আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চলছে রামপুরহাট মেডিক্যালেও। শনিবার অনির্দিষ্টকালের জন্য আউটডোর পরিষেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামেন জুনিয়র, ইর্ন্টান, নার্স ও মেডিক্যাল পড়ুয়ারা। যার জেরে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়। আউটডোরে পরিষেবা নিতে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। তবে ইমার্জেন্সি পরিষেবা চালু রয়েছে। রাতের দিকে তাঁরা ইমার্জেন্সি বিভাগের মেন গেট বন্ধ করে ব্যানার ঝুলিয়ে ভিতরে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। যদিও ইমার্জেন্সি রোগীদের সুবিধার্থে পিছনের একটি দরজা খুলে দেয় মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ।

    আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, রামপুরহাট মেডিক্যালের নিরাপত্তা বাড়িয়ে তোলা হোক। জুনিয়র চিকিৎসক অনিন্দিতা সাহা বলেন, সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে স্থায়ী পুলিস ক্যাম্প রয়েছে। কিন্তু পাঁচ বছর হয়ে গেলেও এখানে সেই ক্যাম্প নেই। যার জেরে প্রায়ই রোগীর পরিজনরা তাণ্ডব চালাচ্ছে। ভাঙচুর, মারধর করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট জায়গাগুলিতে সিসি ক্যামেরা নেই। একটি রুমেই পুরুষ ও মহিলা চিকিৎসকদের বিশ্রাম নিতে হয়। বাথরুম অপরিষ্কার। চেঞ্জিং রুম নেই। কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেওয়া ছাড়া কিছুই করছে না। ভয়, আতঙ্ক নিয়ে কাজ করা যায় না। আন্দোলনরত ইর্ন্টান শাহবাজ শেখ বলেন, আমরা চাই, কর্তৃপক্ষ এসে আমাদের দাবিগুলি মেনে নিক। তাহলে আমরা কাজে ফিরে যাব। এমএসভিপি পলাশ দাস বলেন, বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে বসব। তাঁদের সাজেশন অনুযায়ী ব্যবস্থা করা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)