• পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূম জেলার ‘ড্রাগ রানি’ বেলা দাস গ্রেপ্তার
    বর্তমান | ১২ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: বয়স ৬৫ বছর। এই বয়সেও পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূম জেলার পুলিসকে ভেল্কি দেখাচ্ছিল ‘ড্রাগ রানি’ বেলা দাস। পুলিসের কাছে অনেক আগে থেকেই খবর ছিল বোলপুরের খাদিপাড়ার বাসিন্দা বেলা দাস ড্রাগ কারবারের সঙ্গে যুক্ত। তার জীবনযাত্রা বদলে গিয়েছিল। দামি গাড়ি চড়ত। সন্দেহ ছিলই। কিন্তু তাকে পাকড়াও করার মতো প্রমাণ পুলিসের কাছে ছিল না। অবশেষে শনিবার রাতে ৫০ কেজি গাঁজা সহ মেমারির পালসিট টোলপ্লাজা থেকে পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তার তিন শাগরেদ রাজেশ খটিক, অসীম সরকার ও ওমপ্রকাশ প্রসাদও গ্রেপ্তার হয়েছে। রাজেশের বাড়ি বোলপুরের হাটতলায়। বাকি দু’জন বর্ধমান জেলার বাসিন্দা। তাদের একজনের বাড়ি কাটাপুকুরে। অন্যজন বাজেপ্রতাপুরের বাসিন্দা। তারা একটি দামি চারচাকা গাড়িতে ওড়িশা থেকে গাঁজা আনছিল। 

    বর্ধমান দক্ষিণের এসডিপিও অভিষেক মণ্ডল বলেন, গাড়িতে গাঁজা আসছে বলে আগে থেকেই খবর ছিল। সেই মতো অভিযান চালিয়ে ৫০ কেজি গাঁজা সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, চার চাকা গাড়িটি বেলা দাসের। সে ওড়িশা থেকে এই গাড়িতে এর আগেও একাধিকবার গাঁজা এনেছে। তারপর পুরিয়া করে বিক্রি করত। তার কাছ থেকে বোলপুর ও বর্ধমানের ছোট ড্রাগ কারবারিরা পুরিয়া নিয়ে যেত। ছোট প্লাস্টিকে থাকা পুরিয়া ২৫০ টাকায় বিক্রি করে। ড্রাগরানি ৩০-৩৫হাজার টাকা কেজি দরে ওড়িশা থেকে গাঁজা আনত। পুরিয়া করে বিক্রির করার জন্য তার দ্বিগুণের বেশি লাভ হতো। পুলিস ধৃতদের জেরা করে জেনেছে, এই সময় গাঁজার চাহিদা অনেক বেশি থাকে। সেই কারণেই সে স্টক বাড়াতে চেয়েছিল। বেলা দাসের কাছ থেকে গাঁজা কেনার জন্য বর্ধমান এবং বোলপুরের বেশকিছু নির্দিষ্ট ক্রেতা ছিল। সে ওড়িশা ছাড়াও অসম ও কোচবিহার থেকেও গাঁজা এনে বিক্রি করেছে। উত্তরবঙ্গ থেকে গাঁজা আনা এখন অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাছাড়া উত্তরবঙ্গের গাঁজার দাম বেশি। ওড়িশার গাঁজার দাম তুলনামূলক কম। সেই কারণে সে ওড়িশা থেকে গাঁজা এনে বিক্রি করত। 

    এক পুলিস আধিকারিক বলেন, বেলা দাস গাঁজা আনার জন্য নিজে ওড়িশা যেত। সে অন্য কারও উপর ভরসা করত না। অনেক সময় গাঁজার গাড়ি হাইজ্যাক হয়ে যায়। কারবারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই এই কাজ করে। কয়েকমাস আগে এরকম ঘটনা হয়। ওড়িশা থেকে গাঁজা আনার সময় মাঝপথেই গাড়িটি হাইজ্যাক হয়ে গিয়েছিল। এক যুবক এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আছে সন্দেহে তাকে ওড়িশায় তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে কারবারিরা। মেমারি থানা এলাকার ওই বাসিন্দা মারা যান। কারবারে ঝুঁকি থাকার জন্য ড্রাগ কারবারি বেলা সব জায়গাতেই নিজে পৌঁছে যেত। গাঁজার কারবার করেই সে দামি চারচাকা গাড়ি ও সম্পত্তি কিনেছে। তার সঙ্গে কারবারে আরও অনেকেই যুক্ত রয়েছে। তাদের পালা করে ওড়িশা বা কোচবিহার নিয়ে যেত। কারবারে বেশিরভাগ সময় সে নিজেই প্রথমে বিনিয়োগ করত।
  • Link to this news (বর্তমান)