• পথশ্রী রাস্তার হতশ্রী দশায় বাড়ছে ক্ষোভ
    বর্তমান | ১২ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: গ্রামাঞ্চলে রাজ্য সরকারের পথশ্রী প্রকল্পের হতশ্রী চেহারা।  কোথাও তৈরি হয়েছে বড়বড় খানাখন্দ, কোথাও বালি-নুড়ি-পিচ উঠে গিয়ে এক জায়গায় চলে এসেছে। আবার কোথাও রাস্তার চিহ্নমাত্র নেই। পথশ্রী প্রকল্পে তৈরি রাস্তার গর্তে জমেছে জল। রাস্তাগুলির এই হতশ্রী দশায় দুর্ঘটনা যেন নিত্যসঙ্গী। অনেক সময়ই জলভর্তি গর্তের গভীরতা বুঝতে না পেরে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে টোটো, অটো কিংবা বাইক চালকদের। 

    বছর ঘুরতে না ঘুরতেই পথশ্রী প্রকল্পের রাস্তাগুলির জরাজীর্ণ দশায় ক্ষোভ ছড়াচ্ছে স্থানীয় মহলে। রাস্তার এই অবস্থায় ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। উঠছে সরকারি কাজের মান নিয়েও। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, অনেক রাস্তা বেহাল। আমরা সেগুলির তথ্য সংগ্রহ করছি। সমস্ত তথ্য হাতে এলেই সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

    শুধু রাস্তা নয়, বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে থাকা সেতুগুলির কঙ্কালসার অবস্থা। সেতু থেকে পিচ উঠে কংক্রিটের আচ্ছাদন সরে গিয়ে লোহার রড বেরিয়ে এসেছে। একদিকে পথশ্রী প্রকল্পের বেহাল রাস্তা, অন্যদিকে সেতুর করুণ পরিস্থিতি দু’য়ের কারণে শিলিগুড়ির গ্রামীণ কিছু পথে কার্যত প্রাণ হাতে নিয়ে চলতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পথশ্রী প্রকল্পের কাজের বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থারা জোড়াতালি দিয়ে কাজ করে চম্পট দিয়েছে। যেটা এই চেহারাই প্রমাণ করে দিচ্ছে। 

    শিলিগুড়ি মহকুমার চারটি ব্লকেই পথশ্রী প্রকল্পে কমবেশি নিম্নমানের কাজের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলি। পথশ্রী প্রকল্পের রাস্তার সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মাটিগাড়া ব্লকের মাটিগাড়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি রাস্তা। রাস্তাটি মাটিগাড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চতুর্থ মহানন্দা সেতু হয়ে পতিরাম পর্যন্ত গিয়েছে। এই রাস্তা নিয়ে প্রথম থেকেই নিম্নমানের কাজের অভিযোগ। প্রায় চার কিমি রাস্তা সংস্কার করতে খরচ হয়েছে ৯৫ লক্ষ টাকা। কাজের শুরুতেই পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ সন্তোষ চৌধুরী নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলে বাধা দিয়েছিলেন। কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকার পর ফের কাজ শুরু করে শেষ করা হয়। অন্যদিকে, পাথরঘাটা, আঠারোখাই, চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েতেও পথশ্রী প্রকল্পের একাধিক রাস্তা ভেঙে চৌচির। 

    মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সন্তোষ চৌধুরী বলেন, ওই রাস্তার ব্যাপারে উপর মহলে অভিযোগ করা হয়েছে। ঠিকাদার সংস্থা সরকারি টাকা অপচয় করে নিম্নমানের কাজ করছে। আর তৃণমূলের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। ( মাটিগাড়া-২ পঞ্চায়েতের তুম্বাজোতে বেহাল দশা। - নিজস্ব চিত্র।)
  • Link to this news (বর্তমান)