• রতুয়ায় ভাঙন পরিদর্শনে গিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়ালেন বিধায়ক
    বর্তমান | ১২ আগস্ট ২০২৪
  • সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। গত কয়েকদিন গঙ্গার জলস্তর বাড়তে থাকায় মালদহের বিভিন্ন এলাকায় পাড় ভাঙার ঘটনা বাড়ছিল। রবিবার সেচ দপ্তরের আধিকারিক, মহকুমা শাসককে নিয়ে রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দটোলা অঞ্চলের শ্রীকান্তটোলায় ভাঙন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। নদী ভাঙন রোধে প্রশাসন আগে কেন ব্যবস্থা নেয় না, ভাঙন রোধে এখন বালি, মাটির বস্তা ব্যবহার কেন করা হচ্ছে, এমন প্রশ্ন করতে শুরু করেন বাসিন্দারা। তাঁরা ভাঙন রোধে বেশকিছু পরামর্শও দেন। তখনই মেজাজ হারান এই বর্ষীয়ান বিধায়ক। অভিযোগ, বিক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দার দিকে তেড়ে গিয়ে তিনি মুখ বন্ধ করতে বলেন। উপস্থিত পুলিস আধিকারিককে নির্দেশ দেন ওই ব্যক্তিকে অ্যারেস্ট করতে। এই ঘটনার পরই কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। মহকুমা শাসকসহ অন্য আধিকারিকদের চেষ্টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিধায়ক বলেছেন, এসব বিজেপির চক্রান্ত। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে দেখে প্রতিবাদ করেছিলাম। পুলিসকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

    মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন শ্রীকান্তটোলা এলাকার ভাঙন পরিস্থিতি দেখতে যান সেচ দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার (উত্তর) গোরাচাঁদ দত্ত, জেলা সেচ দপ্তরের নির্বাহী বাস্তুকার শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায়, মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্ট ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার শুভঙ্কর গুড়িয়া, চাঁচল মহকুমা শাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায় সহ প্রশাসনের অন্য আধিকারিকরা। স্থানীয় বাসিন্দা বিষ্ণুপ্রসাদ শরাফ বলেন, সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের বলেছিলাম এই এলাকায় বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধ সম্ভব নয়। অনেকবার বস্তা দেওয়া হলেও কাজ হয়নি। কঞ্চিসহ বাঁশ দিলে কিছুটা রক্ষা হবে। একথা বলতেই বিধায়ক আমার দিকে তেড়ে আসেন। তিনি আমাকে গালি দিয়ে পুলিসকে অ্যারেস্ট করতে বলেন।

     স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য,সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের ওই বাসিন্দা পরামর্শ দিচ্ছেন দেখে বিষ্ণুপ্রসাদকে উদ্দেশ্য করে বিধায়ক বলেন, সেচ দপ্তরের আধিকারিক, মহকুমা শাসক টেকনিক্যাল লোক। তুমি তাঁদের পরামর্শ দিতে পারো না। তখন বিষ্ণুপ্রসাদ বলেন, তাহলে আমরা চলে যাচ্ছি। এরপরেই বিধায়ক পুলিসকে বলেন, ওকে অ্যারেস্ট করুন।

    রতুয়ায় ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দারা দাবি করেন, এক বছর আগে ভাঙন শুরু হয়েছে। আগে থেকে ব্যবস্থা নিলে আটকানো যেত। স্থানীয় বাসিন্দা শচীন মণ্ডলের কথায়, এক বছর আগে বিধায়কের বাড়ি গিয়ে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছিলাম। তখন তিনি আমাদের কটূ কথা বলেছিলেন। আজ আমরা সব হারিয়েছি, এখন এসে আর কী হবে? জেলা সেচ দপ্তরের নির্বাহী বাস্তুকার শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, শ্রীকান্তটোলা এলাকায় ভাঙন রোধে সেচ দপ্তর জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করেছে। 

    সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন গঙ্গার জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছিল। মানিকচক ঘাটে জলস্তর ছিল ২৪.৮২ মিটার। সেখানে বিপদসীমা হচ্ছে ২৪.৬৯ মিটার। ফুলহর (তেলজান্না) নদীর জলস্তর ছিল ২৭.০৫ মিটার, যার বিপদসীমা ২৭.৪৩ মিটার। মহকুমা শাসক বলেন, ভাঙন রোধে সেচ দপ্তর উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয়দের পরামর্শ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)