• হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ুক, চাইছেন রোগীরা
    বর্তমান | ১২ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কোথাও মোবাইল চুরি হয়ে যায়। কোথাও দালালদের চক্করে পড়ে হয়রান হতে হয়। কোথাও বিছানা পর্যন্ত চুরি হয়ে যায়। কেউ কেউ রাত কাটিয়ে সকালে উঠে দেখেন ব্যাগপত্তর সব হাওয়া। রাতে খাঁ খাঁ করে হাসপাতালের বিশাল চত্বর। তার মধ্যে এ বিল্ডিং থেকে ও বাড়ি যেতে বুক কেঁপে ওঠে মানুষের। অনেকে কর্তব্যরত পুলিসের দেখা পান। তারা একটু নিশ্চিন্ত হয়ে হাঁটেন। যাঁরা পুলিস দেখতে পান না, দুরুদুরু বুক কাঁপে তাঁদের। এই অবস্থায় আর জি করের ঘটনা ঘটল। আর কলকাতার সব হাসপাতালের বাইরে এবং অন্দরে নিরাপত্তা বৃদ্ধির আওয়াজ ওঠা শুরু হয়েছে। ক্রমে জোরালো হচ্ছে দাবি। কলকাতার এন আর এস থেকে মেডিক্যাল। এসএসকেএম থেকে আর জি কর। ন্যাশনাল মেডিক্যাল থেকে চিত্তরঞ্জন। রোগীর বাড়ির আত্মীয়দের দাবি, নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হোক।

    এসএসকেএম থেকে কয়েকদিনের মধ্যে আত্মীয়কে সুস্থ করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন হরেকৃষ্ণ দাস। দক্ষিণেশ্বরের ওই বাসিন্দা বললেন, ‘কিছু দিন আগে শুনছিলাম, এখানে নাকি ঝাড়খণ্ড থেকে কয়েকজন এসেছিলেন। ওরা রাতে থাকতেন। ওদের মোবাইল চুরি যায়। পুলিস থাকলে তা হতো না।’ এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রবিবার বিকেলে গিয়ে দেখা গিয়েছে পুলিসের আউটপোস্ট রয়েছে। কিন্তু সাদা পোশাকের পুলিস নেই। তবে রোগীদের আত্মীয়দের কথায়, ‘নিরাপত্তাহীনতা সেভাবে নেই।’ যদিও খেজুরির বাসিন্দা আদনান খানের বললেন, ‘এখানে তো আমি সপ্তাহখানেক হল আছি। তেমন কোনও ঝামেলা দেখিনি। পুলিসও দেখতে পাই। তবে শুনেছি, রাত্রিনিবাস থেকে নাকি জিনিসপত্র চুরি হয়ে যায়। কিন্তু আমার সঙ্গে কখনও হয়নি।’ রাত্রি নিবাসে থাকেন হাবরার সুশান্ত সরকার। তিনি বললেন, ‘মূল গেটে সিভিক পুলিস দেখতে পাই। মাঝেমধ্যে সাদা পোশাকের পুলিসও থাকে। তবে অনেক বড় জায়গা। তাই নিরাপত্তা আরও বাড়া উচিত।’ আবার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে আসা সজল পাত্র বলেন, ‘মাসখানের আগে আমার এক আত্মীয় রাতে এখানে ছিলেন। তাঁর মানিব্যাগ চুরি গিয়েছিল।’ মেডিক্যাল কলেজে মায়ের চিকিৎসার জন্য রাত কাটাচ্ছেন অনিরুদ্ধ চাকলাদার। তিনি বনগাঁর বাসিন্দা। বলেন, ‘রাতে বিছানা পেতে বাথরুমে গিয়েছিলাম। এসে দেখি, তোষক-বালিশ সব চুরি গিয়েছে। গভীর রাতে কয়েজনকে প্রায়ই দেখি। তাঁদের চেহারা দেখে ঠিক সুবিধার মানুষ বলে হয় না। রাতে বিশেষ করে নিরাপত্তা বাড়ানো উচিত পুলিসের।’ প্রসঙ্গত মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর পিজি হাসপাতালের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়। আউটপোস্টে পুলিস সর্বদাই থাকে। আউটপোস্টে কর্তব্যরত এক পুলিসকর্মী বলেন, ‘সিভিক-হোম গার্ড-আধিকারিক সবমিলিয়ে প্রায় ১০০ জন নিরাপত্তারক্ষী পিজি হাসপাতালে রয়েছেন।’ এবার অন্যান্য হাসপাতালেও নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবি ওঠা শুরু হয়েছে। (আর জি কর হাসপাতালে কলকাতার পুলিস কমিশনার বিনীত গোয়েল-নিজস্ব চিত্র)
  • Link to this news (বর্তমান)