চুলের ক্লিপ দিয়ে তরুণী চিকিৎসকের যৌনাঙ্গে আঘাত? প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য
প্রতিদিন | ১২ আগস্ট ২০২৪
স্টাফ রিপোর্টার: নারীদের উপর নির্যাতনের পর্ন ভিডিও। এগুলিই ক্রমে বিশেষ পছন্দের হয়ে উঠেছিল সঞ্জয়ের। তাই ধর্ষণের সময় মহিলা চিকিৎসকের উপর নারকীয় অত্যাচার করে সঞ্জয়। এমনকী, ধর্ষণের আগে ওই তরুণীর যৌনাঙ্গে তাঁর চুলের ক্লিপ দিয়ে ক্ষত সৃষ্টি করেছিল, এমন অভিযোগও উঠেছে। তাঁর যৌনাঙ্গের কাছ থেকেই উদ্ধার হয়েছে সেই ক্লিপটি। ধর্ষণের আগে ও পরে তরুণী চিকিৎসকের উপর প্রচণ্ড অত্যাচার চালায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। এমনকী চিকিৎসককে খুন করার পরও তাঁর উপর অত্যাচার চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
তাঁর কোমরের হাড়েও বড় ধরনের আঘাত রয়েছে। তদন্ত চলাকালীন পুলিশের অভিমত, আর জি কর হাসপাতালের চারতলায় সেমিনার হলের দরজা বন্ধ করে প্রায় ২৫ মিনিট ক্রমাগত সে অত্যাচার চালিয়ে যায় ওই তরুণী চিকিৎসকের উপর। ধর্ষণের পর যুবতীর দেহের ভিডিও ও ছবি অভিযুক্ত তুলে রেখেছিল কি না, তা মোবাইলের সূত্র ধরে জানার চেষ্টা হচ্ছে। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় যে অত্যন্ত বিকৃত মানসিকতার, এটাই তার প্রমাণ।
সঞ্জয়ের মোবাইল ঘেঁটে পুলিশের হাতে এসেছে বিভিন্ন ধরনের পর্নোগ্রাফি বা নীল ছবির ভিডিও। এর মধ্যে বেশ কিছু রয়েছে অত্যন্ত নিকৃষ্ট মানের। সেগুলিতে ফুটে উঠেছে বিবস্ত্র নারীদের উপর বিভিন্নভাবে অত্যাচারের নমুনা। পুলিশের মতে, সেই ভিডিওগুলি ক্রমাগত দেখত সঞ্জয়। তাতেই সে অত্যন্ত আনন্দ পেত। আর এই নিকৃষ্ট ভিডিওগুলি তার মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাচ্ছিল। এই ধরনের যৌন নির্যাতন তার পছন্দের হয়ে উঠছিল। সঞ্জয়কে জেরা করে ও পারিপার্শ্বিক তথ্য অনুযায়ী পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, প্রত্যেকদিনই অপরিমিত মদ্যপান করত সে।
তার সঙ্গে প্রায় প্রতিনিয়ত কলকাতা ও তার আশপাশের অঞ্চলে একাধিক যৌনপল্লিতে যাওয়া তার প্রায় অভ্যাসে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু যৌনপল্লিতে গিয়ে কোনও যৌনকর্মীর উপর এই ধরনের অত্যাচার করার কোনও সুযোগ সে পায়নি। পুলিশের মতে, সেই কারণে ধর্ষণের সঙ্গে সঙ্গে কোনও মহিলার উপর অকথ্য অত্যাচারের ছক কষে সে। তরুণীর দেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের পর পুলিশের হাতে যে অত্যাচারের রিপোর্ট এসেছে, তাতে এই ব্যাপারে পুলিশ অনেকটাই নিশ্চিত। সেই সূত্র ধরেই তদন্তকারী টিম ‘সিট’ সঞ্জয়কে জেরা করছে।
এদিকে, তরুণীর মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে একটি চুলের ক্লিপ খুঁজে পায়। চুলের ক্লিপটি ছিল তরুণীর বিবস্ত্র দেহের যৌনাঙ্গের কাছে। ওই চুলের ক্লিপটি তরুণীর বলেই পুলিশ জানতে পেরেছে। সেই ক্ষেত্রে নির্যাতন চালানোর সময় সেই ক্লিপটি দিয়ে তরুণীর যৌনাঙ্গে আঘাত করা হয় বলেই ধারণা পুলিশের। এই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পুলিশ ক্লিপটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠিয়েছে।
ক্লিপের নমুনায় তরুণীর দেহরস লেগে রয়েছে কি না, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা তা পরীক্ষা করছেন। এছাড়াও অত্যাচারের নমুনা হিসাবে কোমরে আঘাত করা ছাড়াও দুই চোখে ঘুসি মেরে বা কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়। চোখ থেকে রক্ত বের হচ্ছিল। মুখ থেকে বের হয় রক্ত। মুখ ও নখেও আঘাতের চিহ্ন ছিল। বাঁ পা, পেট, বাঁ গোড়ালি, গলায় ছিল আঘাত। ডান হাতের আঙুলের একটি হাড় প্রায় ভেঙে ফেলা হয়। পুরো ঠোঁট জুড়েই ছিল আঘাত ও ক্ষতের চিহ্ন। এই অত্যাচারের কারণ ও আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে সঞ্জয় রায়কে টানা জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।