• নিরাপত্তা চায় দুই ক্যাম্পাসই, ভিন্নমত CCTV প্রশ্নে যাদবপুর-আরজি কর
    এই সময় | ১২ আগস্ট ২০২৪
  • এই সময়: আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। রবিবার রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এ কথা জানান।ঘটনা হলো, গত সপ্তাহে যে দিন আরজি করের ওই চিকিৎসক-ছাত্রীকে খুন করা হয়, সে দিনই ছিল যাদবপুরে র‍্যাগিংয়ের জেরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার বর্ষপূর্তি। দু'টি ঘটনাই যথেষ্ট শোরগোল ফেলেছে। দুই ঘটনাতেই নিরাপত্তা ও ন্যায় বিচারের দাবিতে পথে নেমেছেন পড়ুয়ারা। এমনকী আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে যাদবপুরের পড়ুয়ারাও আন্দোলনে সামিল হয়েছেন।

    তবে দু’ক্ষেত্রেই নিরাপত্তার দাবি উঠলেও ফারাক থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর প্রসঙ্গে। কেমন সেটা? গত বছর ছাত্রমৃত্যুর পরও যাদবপুরের পড়ুয়াদের একটা অংশ সিসিটিভি চাননি। অথচ আরজি করের ছাত্রছাত্রীরা সরব সিসিটিভি বসানোর দাবিতেই। এই পরিস্থিতিতে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বলেন, 'আরজি করের ঘটনা আমাদের নতুন করে ভাবাচ্ছে। ইতিমধ্যেই মেন হস্টেলের করিডরে সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাব এসেছে আমাদের কাছে। সে ব্যাপারে প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে।'

    আজ, সোমবার হস্টেল ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি। যাদবপুরের মেন হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর পরে জানা যায়, সিসিটিভি তো দূর, অ্যান্টি র‍্যাগিং আইনের ন্যূনতমও মানা হয়নি সেখানে। আরজি করেও সিসিটিভির অভাব এবং নিরাপত্তাহীনতা গুরুতর প্রশ্নের মুখে। এ ক্ষেত্রে পড়ুয়ারা যে ১০ দফা দাবি কর্তৃপক্ষকে দিয়েছেন, তার একেবারের শুরুর দিকেই রয়েছে সিসিটিভির দাবি।

    আরজি কর কলেজ সূত্রে খবর, সেখানে সচল সিসিটিভি ১৬২টি। খান ৪৮ বিকল। চেস্ট ডিপার্টমেন্টের যে সেমিনার রুমে ওই ছাত্রীর দেহ মেলে, সেখানে কোনও সিসিটিভি নেই। এমনকী তার আশেপাশেও সিসিটিভিগুলি সচল নয় বলে অভিযোগ। যে সাত তলা অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ে পড়ুয়াদের ক্লাস হয়, সেখানেও সিসিটিভি বিকল বলে খবর।

    শনিবার স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম আরজি করে যান। তাঁর সঙ্গে বৈঠকেও এ নিয়ে নিজেদের দাবি তুলে ধরেন পড়ুয়ারা। স্বাস্থ্যসচিব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু বিষয়ে নজর রেখে এগোচ্ছেন। এক আধিকারিকের কথায়, 'হাসপাতালে যত্রতত্র সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর সবচেয়ে বড় অন্তরায় পেশেন্টদের গোপনীয়তা, বিশেষত মহিলা ওয়ার্ডে। আবার, গুরুতর রোগীদের বেডেই শৌচকর্ম সারতে হয়।'

    রবিবার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এ প্রসঙ্গে বলেন, 'ছাত্রছাত্রীদের বলা হয়েছে, সিসিটিভি নিয়েও সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মেনে যা করার করা হবে।' এক বছর আগে যাদবপুরেও ক্যামেরা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। পড়ুয়াদের একাংশ সিসিটিভির পক্ষে সওয়াল করলেও অনেকেই ক্যাম্পাসে তার বিরোধিতা করেন। যদিও ক্যাম্পাসের কিছু স্ট্র্যাটেজিক লোকেশন এবং হস্টেলের গেটে সিসিটিভি ক্যামেরা বসান কর্তৃপক্ষ।

    দিন কয়েক আগে যাদবপুরের মেন হস্টেলেই এক ছাত্রকে ঘিরে ধরে এমন ভাবে চোর অপবাদ দেওয়া হয় যে তাঁকে হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছিল। তখনই হস্টেলের করিডরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর দাবি উঠেছে। এবং তাতেও একদল পড়ুয়া বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। কী যুক্তি তাঁদের? বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অনুষ্ণা দাসের কথায়, 'আইআইটি তো সিসিটিভি ক্যামেরায় মোড়া। সেখানে কি র‍্যাগিং, ছাত্রমৃত্যু কমানো গিয়েছে?' যদিও রেজিস্ট্রারের বক্তব্যের পর তাঁদের আপত্তি কতখানি টিকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
  • Link to this news (এই সময়)