• 'ব্যবহার থেকে চিকিত্‍সা, ওঁর মতো মেয়ে আর হবে না', চোখের জল বাঁধ মানছে না মধ্যমগ্রাম মাতৃসদনেও
    ২৪ ঘন্টা | ১২ আগস্ট ২০২৪
  • মনোরঞ্জন মিশ্র: আর জি কর হাসপাতালে যাওয়ার আগেই এখানেই অর্থাৎ মধ্যমগ্রাম মাতৃসদন হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন খুন হওয়া ডাক্তারি পড়ুয়া। মধ্যমগ্রাম মাতৃসদন অর্থাৎ নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস স্পেশালাইজড এন্ড রিসার্চ সেন্টার,পুরসভার অধিনস্থ এই হাসপাতেলেই সে চিকিৎসক হিসাবে ছিলেন। কেমন ছিলেন ওই ট্রেনি চিকিত্‍সক। সহকর্মীরা এই ঘটনার শোনার পর থেকেই মর্মাহত। চোখে জল ধরে রাখতে পারছেন না।

    এই ঘটনার পর হাসপাতালের সকল মহিলা নার্স-সিস্টার-সহ কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। একটাই ভয় যদি আর জি কর হাসপাতালের মত জায়গায় এই ঘটনা ঘটতে পারে তাহলে যে কোনও জায়গায় ঘটতে পারে। আর তার মত মেয়ে আর পাওয়া যাবে না, তার ব্যবহার, তার চিকিৎসা, রোগীদের বোঝানো এবং তিনি যখন এমারজেন্সি ডিউটি করেছেন,তখন কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়া রোগীরা রক্তপাত হতে হতে হাসপাতালে আসতেন তখন তাঁর সেলাই দেখে অন্যান্যরা সিস্টার নার্সরা মুগ্ধ হতেন। এত ভালো সেলাই দিতে কখনও দেখেনি।

    প্রত্যেকের সঙ্গে ভালো ব্যবহার, সময়মতো ডিউটিতে আসা, এমারজেন্সি ডিউটি এবং সর্বশেষ আইসিইউতে তিনি দায়িত্বভার মাথা উঁচু করে সুনামের সহিত সামলে গিয়েছেন। তিনি যখন আর জি কর হাসপাতালে চলে গেলেন মাতৃসদন ছেড়ে, তখন সবাই ভারাক্রান্ত হয়েছিলেন। একজন ভালো মানুষকে আগামিদিনে না পেতে পেরে। তবে তাকে যে আর কোনদিনও পাবে না তা ভাবতে পারেনি কেউ।

    নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস স্পেশালাইজড এন্ড রিসার্চ সেন্টার অর্থাৎ মাতৃসদন হাসপাতালের ইনচার্জ পঙ্কজ কান্তি চন্দ্র জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তিনি ছিলেন কর্মরত। তিনি না দেখলেও তার সম্পর্কে তিনি শুনেছেন। তাই এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের যেন কোনও পরিচয় না দেখেই শাস্তি দেওয়া হয়, যা দেখে শিক্ষা নেবে এমন অপরাধীরা। তিনি আরও বলেন, মা বাবার একমাত্র সন্তান হারাল, কিন্তু এই সমাজ একজন ভালো চিকিৎসক হারালো,যেখানে আমাদের চিকিৎসকের সংখ্যা খুবই কম।

    ওয়ার্ড মাস্টার সুখেশ রায় জানান,২০১৯ সাল থেকে করোনার সময়ে দায়িত্ব নিয়ে তিনি পরিষেবা দিয়ে গেছেন,তার মত চিকিৎসক কম দেখা গেছে,তাকে হারিয়ে মর্মাহত,এবং এই জঘন্য অপরাধের কি ধরনের শাস্তি হলে ডাক্তার পড়ুয়ার আত্মার শান্তি পাবে তার ভাষা নেই সুখেশ বাবুর কাছে। অন্যদিকে সহকর্মীরা যারা কাজ করেছিলেন তাঁর সঙ্গে তারাও তার সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রথমেই তার ব্যবহারের কথা তুলে ধরেন। অনেকেই হাসপাতালে আসেন,দায়িত্ব সামলান, আবার অন্যত্রে চলেও যান, কিন্তু তাঁর ব্যবহার তার কাজ মনে রাখার মত।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)