আত্মহত্যার প্রবণতা রুখতে পদক্ষেপ, স্বাস্থ্যদপ্তরকে বিশেষ নির্দেশ হাই কোর্টের
প্রতিদিন | ১২ আগস্ট ২০২৪
গোবিন্দ রায়: রাজ্যে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা। তা প্রতিরোধে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দপ্তরকে (Health department of WB) অবিলম্বে পদক্ষেপের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সম্প্রতি এনিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে মামলাকারীর বক্তব্য শুনে পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
হাই কোর্ট (Calcutta HC) জানিয়েছে, আত্মহত্যার প্রবণতাকে প্রতিরোধ করতে ২০১৭ সালে ‘মেন্টাল হেলথ কেয়ার অ্যাক্ট’ নামে স্বাস্থ্যমন্ত্রক যে আইন তৈরি করে, ওই আইন লাগু করার অংশ হিসাবে ২০২০ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রক জাতীয় আত্মহত্যা প্রতিরোধ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে আত্মহত্যা (Suicide) প্রতিরোধে এই আইনকে কার্যকর করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ তেমন চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করেছিলেন সুরেশকুমার সাহু নামে একজন আইনজীবী। সেই মামলাতেই এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে মেন্টাল হেলথ কেয়ার অ্যাক্টের ৯৪ ও ১১৫ ধারাকে বিশেষভাবে লাগু করতে হবে। এখানে আত্মহত্যা প্রতিরোধে উদ্বেগ, বিষণ্ণতা ও মানসিক চাপ কমানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। মামলায় দাবি, পড়াশোনা থেকে শুরু করে বৈবাহিক বা পারিবারিক সম্পর্কের চাপে মানসিক সমস্যা (Mental stress) বাড়ছে। সময়মতো কেরিয়ার গড়তে না পেরে বা দাম্পত্য সমস্যার ফলে অনেকেই প্রবল মানসিক চাপে ভুগছেন। সেই চাপ অসহ্য হওয়ায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন বহু মানুষ। যাঁদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, তাঁদের সমস্যা বেশি। শুধু তাই নয়, এই প্রবণতা সম্প্রতি আরও অনেকটাই বেড়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। মামলাকারী আরও জানান, অনেক ছাত্রছাত্রী বৈবাহিক সম্পর্কের কারণে বা অন্যান্য পারিবারিক সমস্যায় জর্জরিত থাকেন। অন্য কোনওভাবে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার আশঙ্কাও থাকে। তাঁদের জন্য আরও বেশি করে চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করুক। এতে রাজ্যের যুক্তি, তারা ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করেছে। একাধিক হাসপাতালে মানসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে টোল-ফ্রি (Toll free) নম্বর। তাছাড়া মেডিক্যাল পড়ুয়াদের গেটকিপার ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে।
মামলার শুনানি চলাকালীন এই প্রবণতা যাতে কমানো যায়, তার জন্য বিভিন্ন বেসরকারি উদ্যোগে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আদালত। পর্যবেক্ষণ, আত্মহত্যার মতো ঘটনা আটকাতে সংবাদমাধ্যমকেও এগিয়ে আসতে হবে। এই ধরনের ইতিবাচক খবর পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি বা বেসরকারি সংগঠনের ফোন নম্বর উল্লেখ করতে পারে। তার ফলে কারও প্রয়োজন হলে তিনি টোল-ফ্রি নম্বরে যোগাযোগ করে উপকৃত হতে পারেন।