আর জি করের তরুণী চিকিৎসককে অচেতন করে ধর্ষণ? ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ইঙ্গিত
প্রতিদিন | ১২ আগস্ট ২০২৪
অর্ণব আইচ: আর জি করের(R G Kar Medical College & Hospital) তরুণী চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টে সামনে এল একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধৃত সঞ্জয় রায় প্রথমে অচেতন করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করেছে বলেই খবর। তার পর তাঁকে খুন করা হয়েছে। মূলত মদ্যপ অবস্থায় পর্ন ভিডিও দেখার ফলে উত্তেজনার বশে এই কাজ করেছে বলে এখনও পর্যন্ত মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও তদন্তে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী পুলিশ মনে করছে, একাই ওই তরুণী চিকিৎসকের উপর নারকীয় অত্যাচার চালিয়েছে সঞ্জয়। এখানে অন্য কেউ আর যুক্ত নেই বলেই অনুমান।
গত ৮ আগস্ট নাইট ডিউটি ছিল তরুণী চিকিৎসকের। খাওয়াদাওয়ার পর জরুরি বিভাগে চার তলার সেমিনার হলে ঘুমিয়ে পড়েন। পুলিশ সূত্রে খবর, কিছুক্ষণ পর ওই ঘরে ঢোকে সঞ্জয়। সেমিনার হলে ঢুকে দরজা বন্ধের চেষ্টা করে। লক খারাপ থাকায় দরজা যদিও বন্ধ করা যায়নি। কম্বল চাপা দিয়ে সেই সময় ঘুমিয়েছিলেন তরুণী চিকিৎসক। কম্বল সরিয়ে তাঁকে দেখে সঞ্জয়। প্রথমে তরুণী চিকিৎসকের গলা টিপে ধরে অভিযুক্ত। ঘুম ভেঙে যায় তরুণীর। তিনি সঞ্জয়ের মুখ চেপে ধরেন। সে কারণে ধৃতের মুখেও একাধিক ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। প্রবল শক্তিতে তরুণী চিকিৎসকের মুখ চেপে ধরে সঞ্জয়। সেই সময় সঞ্জয়ের দু’হাতের নখের আঁচড়ে তরুণী চিকিৎসকের মুখে একাধিক ক্ষত তৈরি হয়। ততক্ষণে সঞ্জয় তরুণী নিঃশ্বাস চেপে ধরে। রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয় দুজনের। সঞ্জয়ের হাত চেপে ধরেন নির্যাতিতা। তাই অভিযুক্তের দু’হাতেও ৬-৭টি নখের দাগ পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে আরও খবর, ধস্তাধস্তির জেরে চশমার কাচ ভেঙে যায়। সেই ভাঙা কাচে তরুণীর চোখে আঘাত লাগে রক্তপাত হয়। যন্ত্রণায় কাতরে ওঠেন তরুণী চিকিৎসক। চিৎকার করার চেষ্টা করেন। চিৎকার বন্ধ করে মুখ আরও জোরে চেপে ধরে তরুণী চিকিৎসকের দেওয়ালে মাথা ঠুকে দেওয়া হয়। এত জোরে গলা টিপে ধরা হয় যে তাঁর থাইরয়েড কার্টিলেজ ভেঙে যায়। অচেতন হয়ে পড়েন। সেই অবস্থায় তাঁর পোশাক খোলা হয়। যৌন নির্যাতন করা হয় তাঁকে। এর পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। তরুণীর যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, কুমারী (Virgin) ছিলেন তরুণী চিকিৎসক। গোড়ালিতে আঘাত রয়েছে তাঁর। বিকৃতকাম হওয়ার ফলে এমন নৃশংসভাবে কোনও তরুণীকে সঞ্জয় অত্যাচার করতে পেরেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকার সম্ভাবনা এখনও পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।