সাতদিন নয়, চারদিন বসবে দোকান! সোনাঝুরির হাট নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত বনদপ্তরের
প্রতিদিন | ১৩ আগস্ট ২০২৪
দেব গোস্বামী, বোলপুর: আপাতত বনদপ্তরের জায়গা থেকে সরানো হচ্ছে না সোনাঝুরির হস্তশিল্পীদের হাট। কিন্তু সপ্তাহে সাতদিন হাটে বিক্রি করা যাবে না। চারদিন পসরা নিয়ে বসতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। এবার থেকে শুক্র থেকে সোমবার পর্যন্ত খোলা থাকবে সোনাঝুরির হাট। স্পষ্ট নির্দেশ বনদপ্তরের।
শান্তিনিকেতনে হাট সংলগ্ন এলাকা বনদপ্তরের অধীনে হওয়ায় বেশ কিছু বিধিনিষেধ চালু হতে চলেছে। বোলপুর বনদপ্তরের স্পষ্ট নির্দেশিকা, জঙ্গলের ক্ষতি কোনওভাবেই রেয়াত করা হবে না। হাট কমিটিকে জঙ্গল এলাকাতেই বসাতে হবে প্রায় দশ হাজার চারা গাছ। এছাড়াও জঙ্গল থেকে মাটি চুরি, চারচাকা গাড়ি-টোটোর দৌরাত্ম্য, গাছপালা নষ্ট হলেই নেওয়া হবে পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য, প্রায় ২০ বছর আগে বনদপ্তরের জায়গায় কয়েকজন স্থানীয় গ্রামবাসী, হস্তশিল্পী ও আদিবাসীশিল্পীদের নিয়ে শুরু হয় সোনাঝুরির হাট। সেই হস্তশিল্পীদের হাট আজ অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সারা বছর দূর-দূরান্তের হাজার হাজার মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। তবে বনদপ্তরের জায়গা দখল করে অবৈধ নির্মাণ ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওটা হোটেল, রিসোর্টের জন্য হস্তশিল্প সোনাঝুরি হাটের সৌন্দর্য ক্রমশ হারাচ্ছে বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকেরা। জঙ্গল নষ্ট হচ্ছে বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন পরিবেশপ্রেমীরাও। তবে এবার জঙ্গল বাঁচাতে জমি চিহ্নিতকরণের পরিকল্পনার পর হাট চারদিন খোলার নির্দেশ দিয়েছে বনদপ্তর। বোলপুরের বনদপ্তরের আধিকারিক জ্যোতিষ বর্মন জানান,”জীববৈচিত্র্যের কথা মাথায় রেখেই হাট চারদিন খোলা থাকবে। তিনদিন জঙ্গল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও গাছ লাগানো পরিচর্যা চলবে। বনবিভাগ এবং হাট কমিটির যৌথভাবে জঙ্গল সুরক্ষা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জঙ্গলের কোনও ক্ষতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।”
শান্তিনিকেতনের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সোনাঝুরি খোয়াই হাট, গোয়ালপাড়ার কোপাই নদীর তীরে সারাবছর পর্যটকদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মত। আর সেই পর্যটকদের উপরেই হস্তশিল্পীদের রুটি-রুজি চলে। বর্তমানে বনাঞ্চল ছাপিয়ে রাস্তায় বিস্তৃত এই হাট। ভিড়ও হাট সংলগ্ন রাস্তায় যানজট সামলাতে প্রশাসনকে তটস্থ থাকতে হয়। তবে বন দপ্তরের পদক্ষেপে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় হস্তশিল্পী ও ব্যবসায়ীরা। হস্তশিল্পদের ইউনিয়নের সদস্য আরোজ মন্ডল জানান,”বোলপুর-শান্তিনিকেতনে সরকারি জায়গার উপর ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। আমরাও বনদপ্তরের জায়গায় ব্যবসা করায় দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে রুটি-রুজির প্রশ্নে বনদপ্তর চারদিন করে হাট চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এতে খুশি প্রায় ১৭০০ হস্তশিল্পী ও ব্যবসায়ী। জঙ্গলে যাতে কোনোভাবেই ক্ষতি না হয়। হাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে শুরু করে গাছ লাগানো এবং পরিচর্যায় বিশেষ নজর দেবে সকলেই।”