রাজ্যে প্রথম প্লাজমা এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে লিভারের জটিল অসুখ সারিয়ে তুলল এসএসকেএম...
আজকাল | ১৩ আগস্ট ২০২৪
বিভাস ভট্টাচার্য
চিকিৎসা ব্যবস্থায় নতুন দিশা দেখাল এসএসকেএম। 'প্লাজমা এক্সচেঞ্জ'র মাধ্যমে সুস্থ করে তুলল লিভার খারাপ হয়ে যাওয়া প্রায় মরণাপন্ন এক রোগীকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যাকে বলা হয় 'লিভার ফেইলিওর পেশেন্ট'। এই রোগীকে 'লিভার ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট'-এর পরামর্শ দিয়েছিল রাজ্যের বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল। গত মে মাসে এই সাফল্য পায় এসএসকেএম-এর স্কুল অফ ডায়জেস্টিভ অ্যান্ড লিভার ডিজিজেজ (এসডিএলডি) বিভাগ।
এবিষয়ে এসডিএলডি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. মহিনউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, 'রাজ্যে এই প্রথম ট্র্যানসপ্ল্যান্ট ছাড়াও লিভারের কঠিন অসুখে ভোগা একজন রোগীকে প্লাজমা এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সুস্থ করে তোলা হয়েছে। বর্তমানে ওই রোগী ভালো আছেন এবং ধীরে ধীরে একেবারেই
স্বাভাবিক জীবনযাত্রার দিকে এগোচ্ছেন।'
ডা.মহিউদ্দিন বলেন, হাওড়া জগাছার বাসিন্দা ওই রোগী একজন মহিলা। তাঁর বিয়েও ঠিক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে সাধারণ জন্ডিস থেকে তাঁর লিভার দুই সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি অকেজো হয়ে যায়। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসার জন্য যান কিন্তু পরীক্ষার পর সকলেই তাঁকে লিভার ট্র্যান্সপ্ল্যান্টের পরামর্শ দেয়।' তিনি জানান, ট্র্যান্সপ্ল্যান্টের জন্য লিভার সবসময় পাওয়া যায় না। এটা তাঁকে বুঝিয়ে বলা হয় এবং পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা তাঁর প্লাজমা এক্সচেঞ্জের সিদ্ধান্ত নেন।
ডা. মহিউদ্দিন বলেন, 'এই রোগীর ক্ষেত্রে যে সমস্যাটা সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছিল সেটা হল রোগী 'লিভার কোমা'য় আক্রান্ত হন। যার ফলে অস্বাভাবিক আচরণ এবং পরিচিতদের চিনতেও অসুবিধা হচ্ছিল। যেটা অত্যন্ত বিপজ্জনক একটি দিক এবং এখানে রোগীর প্রাণ সংশয় তৈরি হয়।'
চলতি বছরের মে মাসে ওই রোগীর প্লাজমা এক্সচেঞ্জ করা হয়। কী এই প্লাজমা এক্সচেঞ্জ? ডা. মহিউদ্দিন বলেন, একইসঙ্গে রোগীর প্লাজমা বের করে আনা হয় এবং তাঁকে প্লাজমা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে আমরা ওই রোগীর পরপর তিনদিন প্লাজমা এক্সচেঞ্জ করেছিলাম। এবিষয়ে অন্য যে চিকিৎসক যুক্ত ছিলেন তিনি এসডিএলডি বিভাগের চিকিৎসক ডা. দীপক কুমার। রোগীকে কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। যখন দেখা যায় রোগী সুস্থ হয়ে গিয়েছেন তখন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই থেরাপি আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী অন্য রোগীদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করব।'