• বিপদসীমা পার, গঙ্গার জল ঢুকল একাধিক গ্রামে
    বর্তমান | ১৩ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ ও সংবাদদাতা, মানিকচক: কয়েকদিন ধরে আশঙ্কা ছিলই। সোমবার তাই হল। গঙ্গার জলস্তর চরম বিপদসীমা ছুঁয়েছে। গঙ্গায় নতুন করে প্রায় এক মিটার জলস্তর বেড়েছে। ইতিমধ্যে গঙ্গায় লাল সংকেত জারি করেছে সেচদপ্তর। এর ফলে মানিকচক ব্লকের আরও একাধিক গ্রাম নতুন করে জলমগ্ন হতে পারে। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৪৫ টি গ্রাম জলমগ্ন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। গঙ্গাপারের বহু মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। জলবন্দি গ্রামবাসীদের উদ্ধারে প্রশাসন নৌকা নামিয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া  স্থানীয় বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন।

    জেলাশাসকের বক্তব্য, দুর্গতদের জন্য ১১ টি ফ্লাড শেল্টার চালু রাখা হয়েছে। ১২০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কমিউনিটি কিচেন এবং জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত ছটি হেলথ ক্যাম্প করা হয়েছে। পাশাপাশি ১৩ জন গর্ভবতীকে মানিকচক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। 

    রবিবার মানিকচক ঘাটে গঙ্গার জলস্তর ছিল ২৪.৮২ মিটার। গত চব্বিশ ঘণ্টায় মানিকচক সহ জেলায় বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১৯.৫ মিলিমিটার। কিন্তু ‘আপার ক্যাচমেন্ট’ অর্থাৎ উত্তরাখণ্ড এবং উত্তর বিহার থেকে আসা জলে সোমবার বেলা বারোটার সময় গঙ্গার জলস্তর বেড়ে হয়েছে ২৫.৩ মিটার। জানা গিয়েছে, গঙ্গার বিপদসীমা ২৪.৬৯ মিটার। যা রবিবার সকালেই পার হয়ে গিয়েছিল। মানিকচক ঘাটে গঙ্গার জলস্তর বিপদসীমা পার করেছে। বেড়ে হয়েছে ২৫.৩ মিটার। গঙ্গা যেভাবে ফুলে ফেঁপে উঠেছে, তাতে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। 

    গঙ্গার ভয়াল রূপে আতঙ্কিত বাসিন্দারা। উত্তর চণ্ডীপুর জেলার ভুবনটোলা, মানিকনগর ও গঙ্গাধরটোলা গ্রামে নতুন করে জল ঢুকতে শুরু করেছে। উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশাপাশি হীরানন্দপুর ও গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা জলের তলায়। সোমবার দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেও নতুন করে গঙ্গার জল হু হু করে ঢুকতে শুরু করেছে। 

    ইতিমধ্যে উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কেশরপুরে বাঁধ ভেঙে কেশরপুর, কালুটোনটোলা, পশ্চিম রতনপুর, চামা, মানিকনগর জলমগ্ন  হয়েছে। সোমবার নতুন করে জলমগ্ন হয়েছে ভুবনটোলা, বড় কার্তিকটোলা, অশোকনগর কলোনি, চম্পানগর, জিলাব্দিটোলা, কাশিমনগর, রাহাতপুর গ্রাম। 

    অন্যদিকে, কালুটোনটোলা, পশ্চিম রতনপুরে বাঁধে আটকে থাকা প্রায় তিনশো পরিবারকে প্রশাসন উদ্ধার করেছে। তাদের ত্রিপল এবং শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।   কালুটোনটোলার বাসিন্দা বীরবল মাহাত বলেন, প্রশাসন নৌকার ব্যবস্থা করায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আমরা ঘর ছেড়েছি। তবে ৮ থেকে ১০টি পরিবার এখনও পশ্চিম রতনপুর বাঁধে রয়েছেন। ঘরে জল ঢুকে পড়ায় পরিবারকে নিয়ে আতঙ্কে অঙ্গদ মাহাত। তিনি বলেন, ঘরের বহুমূল্য জিনিসপত্র চুরির আশঙ্কা রয়েছে। সেগুলি দেখাশোনার জন্যই আমরা বাঁধে রয়েছি। 
  • Link to this news (বর্তমান)