• নিহতের শরীরে দু’রকমের নখের আঁচড়ের দাগ কেন?
    বর্তমান | ১৩ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা:  আরজিকর হাসপাতালে  মহিলা চিকিৎসকের দেহে দুরকম নখের আঁচড় কেন, তাই নিয়ে  ধন্দ বেড়েছে। তাহলে কী অভিযুক্ত সিভিক সঞ্জয় রায়ের সঙ্গে আরও কেউ ডাক্তারদের রেস্ট রুমে ছিলেন? এই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। পাশাপাশি সঞ্জয়ের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন যেখানে ছিল, ওই একই জায়াগয় কিছু নম্বরের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। যা থেকে অন্যজনের উপস্থিতির সম্ভাবনা জোরাল হচ্ছে। যদিও এই  বিষয়ে  অভিযুক্ত এখনও দাবি করছে, ঘটনা সে একাই ঘটিয়েছে। তবে ওই মহিলা ডাক্তার যে তার হাত থেকে বাঁচতে দরজা খুলে বাইরে বেরনোর চেষ্টা করেছিলেন, তা অফিসারদের জানিয়েছেন বলে খবর।

    তদন্তকারীদের জেরায় আস্তে আস্তে মুখ খুলতে শুরু করেছে সিভিক সঞ্জয়। কীভাবে সে এই ঘটনা ঘটাল, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরেছে বলে খবর। ধৃত পুলিসকে জানিয়েছে, চারতলায়  সেমিনার হলে যাওয়ার আগে সে তিনতলার করিডোরে অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করে। সেখানে কোনও মহিলা আছে কি না, তা খুঁজছিল। মদ ও গাঁজা দুটো একসঙ্গে খাওয়ায় নেশা চড়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় সে চতুর্থ তলে পৌঁছয়। রোস্টার দেখে সে জানতে পারে, মহিলা চিকিৎসক আছেন বৃহস্পতিবারের ডিউটিতে। এরপর রেস্ট রুমে ঢুকে দেখে এক মহিলা চিকিৎসক গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সে ওই চিকিৎসককে জাপটে ধরে। এতে ঘুম ভেঙে যায় ওই মহিলার। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই এর প্রতিবাদ করেন। তাকে লক্ষ্য করে ঘুষি মারে। সেও পাল্টা ঘুষি মারে, চিকিৎসকের থুতনিতে গিয়ে লাগে। বেশকিছুক্ষণ ধরে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি চলে। মহিলাকে ভয় দেখাতে সে মারধর শুরু করে। তাতেও দমেননি ওই চিকিৎসক। উল্টে তার হাত ছাড়িয়ে বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন।  গেটের কাছে পৌঁছে গেলে সঞ্জয় তাঁকে টেনে ঘরের ভিতরে ঢুকিয়ে নেয়। এরপর দেওয়ালে তাঁর মাথা ঠুকে দেয়। এতে চিকিৎসক আহত হন। তারপর চিকিৎসককে ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে  জোর করে তাঁর পরনের জিন্স ও ইনারওয়ার খোলে। চিকিৎসক বাঁধা দিলে সে মারতে থাকে।  তখনও ওই মহিলা চিকিৎসক চেষ্টা করছিলেন নিজেকে রক্ষা করার। সবমহলে অভিযোগ করবেন বলে চিৎকার করতে থাকেন। ওই পিজিটি পড়ুয়া যাতে চিৎকার করতে না পারেন, তারজন্য মুখে কাপড় গুঁজে দেয় সঞ্জয়। জেরায় সে জানিয়েছে, চিকিৎসক এই ধরনের আচরণ করতে থাকায় তার মাথা গরম হয়ে যায়। শ্বাসরোধ করে খুন করে তরুণীকে। এরপর সে তার এক চিকিৎসক বন্ধুকে ফোন করে গোটা ঘটনা জানায়। তদন্তকারীরা বুঝতে পারছেন, চিকিৎসকদের একাংশের সঙ্গে এই সিভিকের ভালো ঘনিষ্ঠতা ছিল। অভিযুক্ত সিভিক তাঁদের কাছে অনেক কিছু পৌঁছে দিতেন বলে  জানা যাচ্ছে।  এর বিনিময়ে তাঁদের দিয়ে. নিজের বহু কাজ করিয়ে নিতেন। সঞ্জয়ের মোবাইল ঘেঁটে একাধিক ডাক্তারের নাম ও হোয়াটস অ্যাপ মেসেজের চ্যাট পাওয়া গিয়েছে। যেখানে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
  • Link to this news (বর্তমান)