• ১০০ বছর ধরে তদন্ত করবেন?  রেশন দুর্নীতিতে ইডিকে তোপ কোর্টের
    বর্তমান | ১৩ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রেশন দুর্নীতির তদন্ত নিয়ে এবার আদালতের কড়া তোপের মুখে পড়ল ইডি। তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে বিচারকের প্রশ্ন, ‘আপনারা কি ১০০ বছর ধরে তদন্ত করবেন? দ্রুত তদন্ত শেষ করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুনানি শুরু করতে চাইছে আদালত। এফআইআরে অনেকের নাম রয়েছে। তাঁদের ধরছেন না কেন?’ রেশন দুর্নীতির অভিযোগে ইডির হাতে ধৃত আনিসুর রহমান ও আলিফ নুরের মামলার শুনানিতে আদালতের এহেন ভৎর্সনার মুখে পড়তে হয় ইডিকে। বিচারকের প্রশ্ন, এই দুই অভিযুক্তের নাম তো এফআইআরে ছিল না। তারপরেও তাঁদের কেন গ্রেপ্তার করা হল? তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ মেলেনি। তাঁরা টাকা পাচার করেছেন, তার প্রামাণ্য নথি কোথায়? টাকা পাচারের তদন্ত না করে ইডি কেন বারবার রেশন দুর্নীতির মূল মামলায় ঢুকে পড়ছে, প্রশ্ন তোলে আদালত। 

    ১০ দিনের হেফাজত শেষে সোমবার ইডি আদালতে হাজির করানো হয়েছিল আলিফ ও আনিসুরকে। ইডি এই দুই ধৃতের আরও চারদিনের হেফাজত চায়। আদালতে তারা বলে, ৪০০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ মিলেছে, যেগুলির মাধ্যমে টাকা পাচার হয়েছে। সরকারি পরিষেবার সুবিধাভোগীদের নামে ভুয়ো নথি দিয়ে অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছিল। সেগুলি কৃষকদের অ্যাকাউন্ট বলে দেখিয়েছিল অভিযুক্তরা। আলিফ ও আনিসুর অ্যাকাউন্টগুলি নিয়ন্ত্রণ করতেন। বিচারক তখন ইডির আইনজীবীর কাছে জানতে চান, এই ১০ দিনে ক’জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে? ইডি জানায়, সাত-আটজনকে জেরা করা হয়েছে। প্রতিদিন এক-একজনকে সাত-আট ঘণ্টা করে জিজ্ঞাসাবাদ হয়েছে। সেই সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বিভিন্ন নথি ও তথ্যপ্রমাণ। সেই নথির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন সংস্থায় পাঠাতে হয়েছে। এরপরই বিচারক বলেন, ‘আপানারা কবে তদন্ত শেষ করবেন? শুনানি আর কবে শুরু হবে?  একশো বছর ধরে তদন্ত চালাবেন?’ আদালত অবশ্য এও জানায়, কাকে গ্রেপ্তার করা হবে বা হবে না, এটা পুরোপুরি তদন্তকারী সংস্থার বিষয়। ইডির আইনজীবী দাবি করেন, ‘যে এফআইআরের কথা হচ্ছে, তা হাইকোর্টের বিচারাধীন। তাই ওই এফআইআরে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে আইনি বাধা রয়েছে।’ সঙ্গে সঙ্গে আদালত জানতে চায়, কোথায় বাধা রয়েছে? এর কোনও স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি এজেন্সির আইনজীবীরা। আদালত আরও জানতে চায়, রেশন দুর্নীতিতে টাকা কোথায় পাচার কোথায় হয়েছে, তা নিয়ে ইডি কী তথ্য পেয়েছে? এরও যথাযথ উত্তর মেলেনি ইডির তরফে। সওয়াল শেষে অবশ্য বিচারক আলিফ ও আনিসুর—দু’জনকেই চারদিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানকেও আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক তাঁকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)