'কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখব। এই দেখলাম রুমাল, পরের মুহূর্তেই দেখলাম তা আস্ত একটা চাদর হয়ে গিয়েছে। সত্যি মিথ্যা ঠাহর করতে পারছি না', শ্যামবাজারে চায়ের দোকানে বসে বিরক্ত প্রকাশ করছিলেন বছর ৬৮-র প্রবীণ। আরজি করের নৃশংস ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ তাঁর এবং আশেপাশে বসা আরও দুই তিন জন প্রবীণের কণ্ঠে। কিন্তু, নেটপাড়ায় বিভিন্ন ভুয়ো তথ্য যেভাবে ঘুরছে তাতে কার্যত অসন্তুষ্ট এই 'প্রবীণ দল'।আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় নিন্দায় সরব সমাজের সমস্ত মহল। একজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত করছে কলকাতা পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছেন দোষীদের কঠোরতম শাস্তির আবেদন করা হবে। মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন তিনি। কিন্তু, তারপরেও সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক তথ্য ইতি উতি ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যে, তা এখন নেটিজেনদের কাছে জটিল ধাঁধা। সম্প্রতি আরজি করে গিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল ভুয়ো তথ্য নিয়ে সতর্কও করেছিলেন। এবার কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে কলকাতা পুলিশও।
সূত্রের খবর, যারা ফেসবুক বা অন্য কোনও ডিজিটাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর পোস্ট করছেন তাদেরও নোটিস পাঠানো হবে লালবাজারের তরফে। লালবাজারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত ১৫ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের নোটিস পাঠানো হতে পারে কলকাতা পুলিশের তরফে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আবেদন বারংবার কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।
আরজি কর ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে নানা ধরনের ভুল তথ্য ও জল্পনা ছড়ানো হচ্ছে বলে নজরে এসেছে পুলিশের। কলকাতা পুলিশের তরফে অনুরোধ করা হয়েছে, এই ধরনের ভুয়ো পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতে। সোমবার কলকাতা পুলিশ ফেসবুকের অফিসিয়াল পেজ থেকে একটি পোস্ট শেয়ার করে। সেখানে বলা হয়, 'সোশ্যাল মিডিয়ায়, বিশেষত ফেসবুকে ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন অসত্য, অনুমাননির্ভর এবং বিভ্রান্তিকর তত্ত্ব ছড়িয়ে দিচ্ছেন নেটিজেনদের একাংশ। আমাদের আন্তরিক অনুরোধ, না-যাচাই-করা এই ধরণের তত্ত্ব, তথ্য বা গুজবে কান দেবেন না। এতে তদন্তের ক্ষতি হয়, ন্যায়ের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়, এবং সর্বোপরি শোকগ্রস্ত পরিবারটি আরও বেশি করে যন্ত্রণাদগ্ধ হয়।' ইতিমধ্যেই শিক্ষার্থীদের জন্য কলকাতা পুলিশের তরফে একটি বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।