• আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ছুটিতে যেতে বলল HC, মুখ পুড়ল খোদ মমতার
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৩ আগস্ট ২০২৪
  • আরজি কর কাণ্ডে প্রথম থেকেই পড়ুয়া এবং আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের রোষের মুখে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এহেন সন্দীপকে গতকাল ক্লিনচিট দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি কর থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরপরই সন্দীপকে ন্যাশনাল মেডিক্যালের অধ্যক্ষ করা হয়। তবে আজ হাই কোর্ট সন্দীপ ঘোষকে লম্বা ছুটিতে যেতে বলল। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, 'বিকেল ৩টে পর্যন্ত সময় দিলাম। এর মধ্যে অধ্যক্ষকে স্বেচ্ছায় ছুটিতে চলে যেতে বলুন। না হলে আমরা নির্দেশ দিতে বাধ্য হব। কীভাবে একজন ইস্তফা দেওয়ার পর, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে ফেরত আনা হল? আপনি কি এত পাওয়ারফুল লোক? আপনি হাসপাতালের অভিভাবক। আপনার যদি নির্যাতিতার প্রতি সহানুভূতি না থাকে, তাহলে আর কার থাকবে? কোনও মানুষ আইনের উর্ধ্বে নয়।'

    আজ মামলার শুনানি চলাকালীন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, 'আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সোমবার সকালে বলেছিলেন সরকারি চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। বিকেলে তাঁকেই অন্য কলেজের মাথায় বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।' এরপরই প্রধান বিচারপতি পর্যবেক্ষণ করেন, '১২ ঘণ্টার মধ্যে পুরস্কৃত হয়ে গেলেন?' এদিকে এই শুনানির সময় সরকার পক্ষের আইনজীবী বলেন, 'তদন্ত করছে পুলিশ। কিছু লুকিয়ে রাখা হচ্ছে না। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে আরও এক জন জড়িত। এর কোনও সত্যতা এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আমরা বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে প্রস্তুত। তদন্তের রিপোর্টও আমরা দেব। ৩৫-৪০ জনের বেশি লোকের বয়ান নেওয়া হয়েছে। আমাদের সময় দেওয়া হোক। প্রত্যেকের যে যে অভিযোগ রয়েছে, আগামিকাল সকাল সাড়ে ১০টায় সবার উত্তর দেব।'

    প্রসঙ্গত, গতকাল চিকিৎসকদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন সন্দীপ ঘোষ। নিজের পদত্যাগের ঘোষণা করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সন্দীপ ঘোষ বলেন, 'এই ঘটনার নৈতিক দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়ে পদত্যাগ করলাম। আমার নামে যে অপপ্রচার হয়েছে। নির্যাতিতা আত্মঘাতী হয়েছেন, এগুলো আমি কখনই বলিনি। আমার নামে মিথ্যা রটেছে। ডাক্তারদের মধ্যেও চোর ডাকাত রয়েছে, সেই মুখোশগুলো খুলে যাবে। আমি অর্থোপেডিক সার্জেন, আমার দুটো হাত রয়েছে, আমি কিছু করে খেতে পারব। আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে, আমি বাবা হিসাবে পদত্যাগ করলাম।'

    এর আগে অভিযোগ উঠেছিল, 'রাতে একা একা সেমিনার হলে থাকা উচিত হয়নি' নির্যাতিতা ট্রেনি চিকিৎসককে নিয়ে নাকি এমনই মন্তব্য করেছিলেন আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। বহু পড়ুয়া এবং চিকিৎসক তাই সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। এছাড়াও এই গোটা ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই আবহে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি বললেন, 'আর অপমানিত হতে পারছি না।' তিনি আরও বলেন, 'কেউ বাধ্য করেননি, স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি।'

    এদিকে শুভেন্দু অধিকারী সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখেন, 'আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা আতস কাচের নীচে রেখে দেখা উচিত। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে এর আগে অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে দু’বার অপসারণ করেছে পশ্চিবঙ্গের স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু রহস্যজনক ভাবে তিনি বারবার তাঁর জায়গায় থেকে গিয়েছেন। একবার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বদলির নির্দেশিকা বদলে যায়। আর একবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে বদলি হলেও মাস খানেকের মধ্যে আবার আরজি করে ফিরে আসেন সন্দীপ। সন্দীপ ঘোষ প্রভাবশালী।'
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)