সিট গঠন করে এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট মামলার তদন্তভার তুলে দেয় সিবিআইয়ের হাতে। সিবিআই রামপুরহাটে একটি অস্থায়ী শিবির খুলে তদন্ত শুরু করে এবং পর্যায়ক্রমে সিবিআই ২৬ জনকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত পলাতক শেখ ছোট লালনকে সিবিআই ওই বছর ৪ ডিসেম্বর গ্রেফতার করে নিয়ে আসে প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ড রাজ্যের পাকুড় থেকে। আদালতের নির্দেশে শেখ ছোট লালন সিবিআই হেফাজতে থাকার সময়ই বাথরুম থেকে গলায় গামছার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হলে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। এই মামলার অপর অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের তৎকালীন রামপুরহাট-১ ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনও গ্রেফতার হন। এই ঘটনায় স্বজনহারা শেখ মিহিলাল প্রথম থেকেই ২০২২ সালের ২১ মার্চ রাতে কারা কারা ঘরের দরজা বাইরে থেকে শিকল দিয়ে বন্ধ করে দিয়ে তাঁর পরিবারের ১০ জনকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছেন তার বর্ণনা দিয়েছেন।
এবার রামপুরহাট ফাস্ট ট্রাক আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সন্দীপ কুণ্ডুর এজলাসে ১২ ও ১৩ আগস্ট বগটুই গণহত্যাকাণ্ডের সাক্ষ্যগ্রহণে ঘটনার মূল সাক্ষী স্বজানহারা শেখ মিহিলাল এবং তাঁর দুই ভাই শেখ শেখলাল ও শেখ বানিরুলের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সেখানে তাঁরা এজলাসে হাজির অভিযুক্তদের কাউকে ঘটনার রাতে দেখেননি বলে সাক্ষ্য দেন। এই মামলায় শেখ ফটিক, শেখ নেকলাল এবং ঘটনায় নিহত আতাহারা বিবির মেয়ে খুশি খাতুন সাক্ষ্য দেন। স্বজনহারা শেখ মিহিলাল এবং তাঁর দুই ভাই শেখ শেখলাল ও শেখ বানিরুল অবশ্য এ ব্যাপারে আদালতের বাইরে কোনও মন্তব্য করেননি। অপরদিকে সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থ তপস্বী বলেছেন, এই তিন ভাই-ই বগটুই গণহত্যাকাণ্ডের পরে নিজেদের পরিবারের লোকজনদের ঘরের মধ্যে ভরে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা, বোমা মারা, আগুন জ্বালানোর কথা বলেছেন। অথচ এই তিন ভাই-ই এজলাসে বিচারকের সামনে অভিযুক্তদের চিনতে পারেননি এবং ঘটনার রাতে দেখেননি বলেছেন। তাই সিবিআইয়ের আইনজীবী হতাশার সুরে বলেছেন, তিনজন সাক্ষী-ই যদি বিরূপ হয়ে যান তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা ওই তিনজনকেই ‘বিরূপ’ সাক্ষী হিসেবে ঘোষণা করেছি।